‘ভারতের ১৯৫২ সালের প্রথম সংবিধানের মূলনীতিতে কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা বা সমাজতন্ত্রের কথা উল্লেখ ছিলো না। বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের প্রথম সংবিধানের মূলনীতি থেকে এই শব্দ দুটো আমদানি করেন ইন্দিরা গান্ধী।ভারতীয় সংবিধানে ৪২তম সংশোধনীতে, মানে ১৯৭৬ সালে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র ঠাঁই পায়। এর পেছনে ছিলো ১৯৭১ সালে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম এবং ভারতজুড়ে বামপন্থীদের উত্থান।’ সাম্প্রতিক এক ফোনালাপে বলছিলেন কলকাতার তরুণ কবি ও সাংবাদিক অতনু সিংহ।
সম্প্রতি ৪৬ বছরে পদার্পণ করেছে বাংলাদেশের সংবিধান। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর দেশের সংবিধান প্রণীত হয়। ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে জন্ম নেয়া এই রাষ্ট্রের সেই সূচনা সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির-রহমানির রাহিম’ (দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহের নামে/পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে) লেখা ছিলো না। ছিলো না রাষ্ট্রধর্মের কোনো বিধানও। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে ‘বিসমিল্লাহ’ সংযোজন করা হয়। আর ১৯৮৮ সালে সাবেক সেনাশাসক এইচএম এরশাদের সময় সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযুক্ত হয়। পরবর্তীতে উচ্চ-আদালত ওই সংশোধনী দুটো বাতিল করলেও ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীতে এই দুটি জায়গা অপরিবর্তিত রেখে সব ধর্মের সমান অধিকারের বিধান সংযুক্ত করে আইনসভা।
সংবিধানের ৪৬ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে নতুন প্রজন্মের এ বিষয়ক ভাবনা জানার চেষ্টা করেছি। আলাপ হয়েছে বিভিন্ন পেশার তরুণ ও যুবকদের সাথে। এ নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে থাকছে দুই তরুণ লেখক হামিম কামাল ও শ্মশান ঠাকুরের আলাপ। তাদের সাথেও মূলত ফেসবুক চ্যাটবক্সে কথা হয় ।
ঈয়ন : দেশে বিদ্যমান সাংবিধানিক প্রেক্ষাপট সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতের মানুষদের জন্য কতটা স্বস্তিদায়ক বলে আপনি মনে করেন?
হামিম কামাল : একবিন্দু স্বস্তিদায়ক নয়।
শ্মশান ঠাকুর : রাজনীতি অন্ধ ক্ষমতায়নের দিকে যাচ্ছে, এখানে স্বস্তি থাকবার কথা নয়।
ঈয়ন : উচ্চ আদালত বাতিলের পরও সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির-রহমানির রহিম’ এবং ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম রেখে সব ধর্মের সমান অধিকারের বিধান সংযুক্ত করার বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখেন?
হামিম কামাল : বিষয়টি স্ববিরোধী।
শ্মশান ঠাকুর : ইসলামকে রাজনীতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই আর কি।
ঈয়ন : সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতধারীদের ব্যাপারে এক শ্রেণীর বাঙালী মুসলমানের যে উগ্রবাদী মনোভাব দেখা যায়; তার পেছনে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক মুসলমানিত্ব কতটা দায়ী বলে আপনার মনে হয়?
হামিম কামাল : রাষ্ট্রের সাংবিধানিক মুসলমানিত্বের বড় দায় আছে। তবে এখানে সরল উত্তরের অবকাশ নেই। অল্প কথায়, এটা সুরক্ষিতা রাষ্ট্রস্বর্গে এমন এক ছিদ্রপথ যার ভেতর দিয়ে অনেক বড় বড় অকল্যাণসর্প প্রবেশ করে একের পর এক। এবং এরা নিয়ত সঙ্গমাচারি। সারাক্ষণ এমনভাবে জড়াজড়ি করে থাকে যে দায় বিচারের লাঠিতে পিটিয়ে আলাদা করা কঠিন।
শ্মশান ঠাকুর : উগ্রতা যখন অর্থের সাথে সম্পর্কিত তখন আইন অবশ্যই তার জন্য দায়ী, সংবিধানও।
ঈয়ন : আপনার দৃষ্টিতে বর্তমান সরকার বা সরকারি দল আওয়ামী লীগ কতটা সংখ্যালঘু বান্ধব?
হামিম কামাল : নীতিগত দিক থেকে আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুবান্ধব। ঐতিহাসিক ভাবেও। তবে বর্তমানের প্রশ্নে দলটির নীতি, ইতিহাস; দুটোই সমাধিস্থ।
শ্মশান ঠাকুর : লীগ সরকার ক্ষমতার জন্য উন্মাদ। কোন সংখ্যালঘু তার কাছে বিষয় নয়, ক্ষমতাই বিষয়।
ঈয়ন : বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতের মানুষ, বিশেষত লেখক-বুদ্ধিজীবিরা সাম্প্রতিক সময়ে, মানে ২০১১ পরবর্তী সময়ে কেমন আছেন? গত ছয় বছর ধরে কতটা সম অধিকার পাচ্ছে সব ধর্মের মানুষ?
হামিম কামাল : ভালো নেই। ধর্মবিচারে, অধিকারে অসাম্য আছে। একইসঙ্গে ধর্মাধর্ম নির্বিচারে অধিকারহীনতার আধিয়ারি জারি। দ্বিমুখী দায়। অধিকার কে কাকে দেবে।
শ্মশান ঠাকুর : অধিকার কি পাচ্ছে? মনে হয় না। সম অধিকারের বিষয়ই আসে না। ক্ষমতাধর আর সাধারণের মধ্যেই সম অধিকার নেই।
মূলত সামরিক ফরমানে (১৯৭৮ সালের ২য় ঘোষণাপত্র আদেশ নং ৪ এর ২ তফসিল বলে) বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে প্রস্তাবণার আগে 'বিসমিল্লাহ’ সন্নিবেশিত হয়। পরের বছর এপ্রিলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে আইনসভা এর বৈধতা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৮ সালের ৫ জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী পাস হয়। এর মাধ্যমে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২-এর পর ২(ক) যুক্ত করা হয়। যাতে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে’। ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীতে এটিতে পরিবর্তন এনে লেখা হয় - ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন।’ একই সংশোধনীতে মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতাও ফিরে এসেছে।
বরিশালের এ দৃশ্য ২০০৬ সালের |
অসাম্প্রদায়িক ছিলো বলা যাবে না!
..কিভাবে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ দাবি করবে..
কতটা স্বাধীন হয়েছে বিচার বিভাগ?
ধর্মের কল নড়ে রাষ্ট্রের বাতাসে..
সন্দেহপ্রবণ, বাঙালী মুসলমানের মন!
হুমকীতে ভারতবর্ষের সুফিভাব
দমনে দৃঢ় রাষ্ট্র কাঠামো
অস্ত্রবাজ সময় ও সমাজে ...
পুলিশ ছাড়া কেউ থাকবে না ...
ভয় পেও না, সাবধান থেকো ...
পরবর্তী প্রজন্মের দায়িত্ব নেবে কে?
ওই বেতনের কেতন উড়ে
হেফাজতের পথে ওলামা লীগ !
সানিকে ঠেকাবে হেফাজত !
নুরুলদ্বয়ের মহালোচিত পুত্রেরা
প্রবীর প্রকৃত প্রতিবাদী অগ্রজ
সময় হুমকী আর হত্যালীলার
মুক্ত সাংবাদিকতা ও আত্মরক্ষার্থে ...
সর্বোচ্চ সংকর জাতের সঙ্কট
ক্রিকেটের মওকায় সাম্প্রদায়িকতা !
সাংবিধানিক পিতা আইনে অনাত্মীয় !
রাষ্ট্রীয় শিশ্ন - ধর্ষন, খুন এবঙ ...
বাংলা জাগবেই জাগবে...
ইসলামে ‘বেপর্দা’ নারীও নিরাপদ
বর্ষবরণে বস্ত্রহরণ কী পরিকল্পিত !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন