Powered By Blogger
childhood লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
childhood লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

২৫ নভেম্বর ২০১৪

তিনিও ছিলেন চলচ্চিত্রের মানুষ

ছবিটি সুনানের তোলা
ফুটবল, আইন পেশা বা রাজনীতি নয়, চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পারিবারিক ব্যবসার কারণেই তাকে খুব সহজে চিনেছিলাম শৈশবে; সেই প্রাইমেরীতে থাকতে। শাহীন আঙ্কেল, মানে সদ্য প্রয়াত কামরুল আহসান শাহীনের কথা বলছি। তার বাবার কথা জানতাম, চিনতাম পুত্রকেও। তাকে প্রথম দেখেছিলাম স্কুলের বারান্দায়। তখন অবশ্য তিনি কে, কেন এসেছেন - কিছুই জানা ছিলো না। কিন্তু কেন জানি মাথার মধ্যে গেঁথে গিয়েছিলেন। সম্ভবত বিশাল বপু আর আদুরে মুখাবয়বের কারণে।

আমার স্কুল ছিলো ফজলুল হক এভিনিউয়ে, উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এর ঠিক উত্তর পশ্চিম কোনে সদর রোডে ছিলো কাকলী সিনেমা হল। একদিন বাসায় ফেরার সময় - ওই হলের সামনের শাহীন আঙ্কেলকে দাঁড়ানো দেখে মেঝ চাচার কাছে জানতে চেয়েছিলাম উনি কে? চাচা তাকে দেখে জানালেন, উনি হলের প্রতিষ্ঠাতা ডা. আবদুস সোবাহানের বড় ছেলে। সেই প্রথম তার নাম জানলাম। অবশ্য এর আগেই ডা. সোবাহানের নাতি সুনানের সাথে পরিচয় হয়েছিলো। স্কুলের জুনিয়র হলেও আমাদের সাথে অদ্ভুত এক সখ্যতা ছিলো তার। এমনটা হয়েছিলো মূলত ওর খালাত ভাই - আদরের সুবাদে। সে ছিলো আমাদের ক্লাসমেট। আর আদর , সুনান -এই দুই ভাইয়ের সম্পর্কটা ঠিক বন্ধুর মতোই ছিলো। সেদিন বাসায় যেতে যেতেই ধারণা করেছিলাম - শাহীন আঙ্কেল বোধকরি সুনানেরই বাবা। এ জন্যই তাকে হয়ত স্কুলে দেখেছিলাম। পরে জেনেছিলাম আন্দাজ ভুল ছিলো না।

প্রাইমারী ছেড়ে হাই স্কুলে ওঠার বছর দুয়েক পরই স্কুলের বন্ধুদের বৈকালিক আড্ডা আর খেলাধূলার অন্যতম স্পট হয়ে উঠেছিলো মল্লিক রোড। মূলত নগরীর বৃহৎ দুটি গার্লস স্কুল, অর্থাৎ সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (সদর গার্লস স্কুল) আর জগদীশ স্বারস্বত গার্লস হাই স্কুল সন্নিকটে হওয়ার কারণে টিনেজার ছেলেদের কাছে ওই এলাকাটি খুবই আকর্ষণীয় ছিলো। বিভিন্ন এলাকার, বিভিন্ন স্কুলের সমবয়সী বন্ধুরা সমবেত হতাম সেখানে। ভদ্র, বখাটে, পাগলাটে – সবাই আসত। শাহীন আঙ্কেলের বাসার ঠিক বিপরীতে পুলিশ ক্লাবের সিঁড়িতে আড্ডা দিতাম আমরা আর মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল বা ব্যাডমিন্টন খেলতাম। বয়োজেষ্ঠ্যদের দৃষ্টি এড়িয়ে বিড়ি-সিগারেট ফোঁকার জন্য ক্লাবের দেয়ালের আড়াল বা অদূরবর্তী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পিছনের সিঁড়ি ছিলো আদর্শ জায়গা। ওই সময় সুনানও আড্ডা দিত, খেলত আমাদের সাথে। আর দূর থেকে বাবাকে আসতে দেখলেই লুকিয়ে যেত দেয়ালের আড়ালে। আমাদের অবশ্য তটস্থ হওয়ার কোনো কারণ ছিলো না। কারণ শাহীন আঙ্কেলও আড্ডা, খেলাধূলা – এসব বেশ পছন্দই করতেন। শুনেছিলাম, একসময়ে দুর্দান্ত ফুটবলার ছিলেন তিনি। গোলরক্ষক হিসাবে খেলেতেন ঢাকার ওয়ারী, আবহনী আর বরিশালের মোহামেডান ক্লাবে। বরিশাল জেলা  দলেরও গোলরক্ষক ছিলেন তিনি।

মৃত্যুর কিছু দিন আগে, রাজপথে...
সাংবাদিকতায় ঢোকার পর ছোটবেলার সেই শাহীন আঙ্কেলের আরো বহু পরিচয় জানা হয় আমার। চেনা হয় রাজনীতিবিদ আর আইনজীবি কামরুল আহসান শাহীনকে। এক সময়ে বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক ছিলেন তিনি। ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটরও। একইসঙ্গে মূলধারার রাজনীতির সাথেও সক্রিয় ছিলেন পুরোটা সময়। ১/১১ পরবর্তী সেনাসমর্থিত সরকারের আমলে অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতা যখন আত্মগোপনে, তখনও তিনি রাজপথে ছিলেন। বড় বড় পদে থাকলেও তার মদদপুষ্ট কোনো সন্ত্রাসী ছিলো না। এ কারণে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সাথেও শত্রুতা ছিলো না তার।

শাহীন আঙ্কেলের সাথে আমার শেষালাপ হয়েছিলো সম্ভবত ২০০৮ সালে ঢাকার নয়াপল্টনে, জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কারযালয়ে। পার্টির তৎকালীন মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সাথে আলাপ করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ফ্রি আছেন দেখে যেচে গিয়েই কথা বলেছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম সুনানের খবরও। এরপরও তার সাথে দেখা হয়েছে বহুবার। কিন্তু কথা হয়নি আর, হবেও না। শুধু পরিবার নয়, পুরো বরিশালকে কাঁদিয়ে তিনি অসীম শূন্য ক্যানভাসে মিলিয়ে গেছেন।
কাকলী ছিলো ব্রিটিশ আমলের স্থাপত্যরীতিতে তৈরী এক মুভি থিয়েটার হল। পুরানো নাম ছিলো জগদীশ হল। সম্ভবত এটি বরিশাল নগরীর দ্বিতীয় সিনেমা হল। ষাটের দশকে এর প্রতিষ্ঠাতা মালিক জগদীশ বাবু দেশান্তরী হওয়ার আগে এটি কিনে রেখেছিলেন সিনেমাপ্রেমী ডা. সোবাহান। তার মৃত্যুর পর ছেলেরাই হলটির দেখভাল করতেন। পরে ঠিক কবে এটি ভেঙে ফেলা হয় তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারবো না, মনে নেই। সম্ভবত গত দশকের মাঝামাঝি সময়ে। সংস্কারের অভাবে তারও অনেক দিন আগে থেকেই বন্ধ ছিলো সিনেমা প্রজেকশন। তবু আজও সদর রোড আর ফজলুল হক এভিনিউয়ের সংযোগস্থলের নাম কাকলীর মোড়।
কয়েক বছর আগে এ নিয়ে আলাপকালে সুনান জানিয়েছিলো, অত্যাধুনিক মাল্টিপ্লেক্স থিয়েটার করার পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছেন শাহীন আঙ্কেল। সম্প্রতি জেনেছিলাম, সে কাজ এগিয়েছেও বহুদূর। কিন্তু তা শেষ করে যেতে পারলেন না তিনি। তবুও আশা করি কাজটি দ্রুতই শেষ হবে। বরিশালের প্রথম মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা থিয়েটারের রূপে পুনর্জন্ম নেবে কাকলী বা জগদীশ। তখন এর নাম শাহীন মেমোরিয়াল সিনেপ্লেক্স করলেও কেউ আপত্তি করবেন না নিশ্চয়ই। কারণ কামরুল আহসান শাহীন সেই আধুনিক স্বপ্নবাজ, যিনি বরিশালে মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা থিয়েটার গড়ার স্বগ্ন দেখেই ক্ষান্ত হননি। স্বপ্নটিকে বাস্তবায়নের দোঁড়গোরায়ও নিয়ে এসেছেন। এসব নিয়ে ভাবতে গিয়ে আজ আরো আপন লাগছে শাহীন আঙ্কেলকে। আহা, তিনিও যে চলচ্চিত্রের মানুষ ছিলেন।

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪

শাপলাকে খোঁজা দরকার

২৬ ডিসেম্বর, ২০০৯। বাল্য প্রেমিকার সাথে সাক্ষাতের মানসে ভর দুপুরে ভিকারুন নিসা নুন স্কুল ও কলেজের পাশের ফুটপাত ধরে হাঁটছি। চারপাশে ওই শিক্ষালয়ের অভিভাবক-শিক্ষার্থী, স্কুল বাস-ভ্যান, রিক্সা, হকার - গিজ গিজ করছে। তাদের ভীড় ঠেলে আগাতে আগাতে আচমকা আঁতকে উঠি। দেখি মাত্র এক কদম দূরে - ছালার চটের বিছানায় নীল কম্বলে জড়ানো একটা রোদে পোড়া গোল চাঁদ, নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। চারপাশ দিয়ে সশব্দে চলে যাচ্ছে ছোট-বড় সহস্র পা; সাথে রিক্সা-গাড়ির শব্দ’তো আছেই। এসবে তার ঘুমে কোনো ব্যাঘাত ঘটে বলে অবশ্য মনে হচ্ছিলো না। বুঝলাম, এ জীবনে সে অভ্যস্ত। তবু কেন জানি তাকে একা ফেলে নিশ্চিন্তে পাশ কাটিয়ে যেতে পারছিলাম না। চারিদিকে তাকিয়ে তার অভিভাবকদের খুঁজলাম, পেলাম না। অদূরে দাঁড়ানো এক ভেলপুরি বিক্রেতার বরাতে জানালাম, বাচ্চাটার নাম শাপলা। ওর মা, আর দু’তিনটি ভাই-বোন ভিক্ষার আশায় স্কুলের গেটগুলোর আশেপাশে আছে। ছুটির সময়ের ভীড় কমে গেলে আবার এখানে চলে আসবে।

ততক্ষণে আমার সঙ্গীনিও সেখানে চলে এসেছে। দু’জনে মিলেই শাপলার মা আর ভাই-বোনদের ফেরার অপেক্ষা করতে থাকলাম। প্রায় ঘন্টাখানেক পরে ভীড়টা আস্তে আস্তে কমতে শুরু করতেই কেঁদে ওঠে শাপলা। চমকে উঠে চেয়ে দেখি তার ঘুম ভেঙেছে। আড়মোরা ভেঙে উপুর হয়ে কম্বল থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে। হামাগুড়ি দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা। আমরা ভাবলাম, সম্ভবত রোদ বাড়ায় কম্বলের মধ্যে তার গরম লাগছে। আর এ গরমের কারণেই হয়ত ঘুমটা ভেঙে গেছে। কম্বল মুক্ত করার পর শাপলার কান্না থেমে যায়। সে উপুর হয়ে শুয়ে ড্যাব ড্যাব করে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। আমরাও তার সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা করি। সাথে থাকা পকেট ক্যামেরায় তার সেই দৃষ্টিবন্দী করতে না করতেই দেখি – দূর থেকেই কি যেনো বলতে বলতে এদিকে দৌড়ে আসছে পরিহিত তিন-চার বছরের একটি ছেলে, তার পিছনে ছয়-সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে। ছেলেটার গায়ে ছেঁড়া সোয়েটার থাকলেও তার কোনো প্যান্ট ছিলো না।  মেয়েটার পরনে বড়দের সোয়েটার। দেখেই অনুমান করলাম - ওরা শাপলার ভাই-বোন। ভীড়ের ফোঁকর গলে ময়লায় মলিন শাড়ি পরিহিত জীর্ণকায় এক মহিলাকেও আগাতে দেখলাম।

আন্দাজ ভুল ছিলো না। তারাই শাপলার ভাই-বোন আর মা। ঢাকার হাজার হাজার ভাসমান পরিবারের মতো ওরাও আজ এই এলাকার ফুটপাত, কাল ওই এলাকার যাত্রী ছাউনি, পরশু স্টেসনের প্ল্যাটফর্ম – এভাবেই দিন কাটে তাদের। শাপলার মা জানিয়েছিলেন, তারা আগে বস্তিতে থাকতেন। কিন্তু এক রাতে তার রিক্সাচালক স্বামী আর ঘরে ফেরে না। পরে লোকমুখে জানতে পারেন, সে অন্য বস্তিতে নতুন বিয়ে করেছে। তবু বিশ্বাস করেননি, স্বামীর অপেক্ষায় থেকেছেন। অবশেষে একদিন পেটের দায়ে পথে নেমেছেন। ভাড়া দিতে না পারায় ছাড়তে হয়েছে বস্তির ঘরটিও।  সব শুনে কি সব জানি ভাবতে ভাবতে ফিরে গিয়েছিলাম সেদিন । শাপলাকে মাঝে মাঝে দেখতে যাওয়ারও কথা ভেবেছিলাম। অথচ প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেছে, শাপলার সাথে দেখা হয়নি। তাকে খোঁজার ফুসরতই মেলেনি আর। বহু ঘটনা মাঝে সে’ও হারিয়ে গিয়েছিলো। সম্প্রতি পুরানো ছবিগুলো ঘাঁটতে গিয়ে শাপলা সামনে এলো আবার। ওর সেই স্থিরদৃষ্টি দেখে এবার নিজেকে কেন জানি খুব অসহায় লাগলো, এবঙ মনে হলো, শাপলাকে খোঁজা দরকার।

Shapla | The Visible Discrimination © eon's photography / pap
সংবাদ সংস্থা আইএনবি’তে কাজ করতাম তখন। তারই বরাত দিয়ে ২০১০ সালের পহেলা জানুয়ারি বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আঞ্চলিক  দৈনিক প্রকাশ করেছিলো শাপলার এই ছবি।  ছবিটির ছাপা হওয়া সেই পুরানো ক্যাপসনটিও পাপ [pap]’র পাঠকদের জন্য এখানে তুলে দিচ্ছি -
“দক্ষিণ এশিয়ার দারিদ্র্যপীড়িত ৩০ কোটি শিশুকে দারিদ্র্যের অন্ধকুঠুরি থেকে বের করে আনতে হলে প্রয়োজন যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার পূরণে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে তারা যেসব বৈষম্যপূর্ণ পরিস্থিতিতে বসবাস করে, সেগুলোও দূর করতে হবে।” সম্প্রতি (গত ১ নভেম্বর, ২০০৯) দক্ষিণ এশিয়ার শিশুকল্যাণ ও সমতাবিষয়ক আঞ্চলিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা এই মত প্রকাশ করেছিলেন। ইউনিসেফের উদ্যোগে ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদারিদ্র্য বিষয়ে বারবার সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়। তবে এইসব বাণী ঐ সম্মেলন কক্ষের চার দেয়ালের মধ্যেই বন্দী হয়ে থাকে। আর এই বাংলাদেশের মত দারিদ্র্যপীড়িত দেশগুলোর শিশুরা ফুটপাতেই হাঁতড়ে বেড়ায় তাদের ভবিষ্যত। তবে আজকাল ওদের নিয়ে অনেক প্রচার আর গোলটেবিল বৈঠক হয়। যাতে সবার জন্য মিনারেল ওয়াটারের বোতলের সাথে সিজনাল কমলা আর কেক- স্যান্ডউইচ থাকে। আর ওরা ডাস্টবিনের ময়লা কুঁড়িয়ে খায়। আজ নতুন বছরের শুরুতে এই শিশুদের জন্য কিছু করার তাগিদ জন্ম নেবে আমাদের সবার মনে, এই প্রত্যাশা। ছবিটি ঢাকার বেইলী রোডের ভিকারুন নিসা নুন স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন ফুটপাত থেকে ক্যামেরাবন্দী করেছেন শরীফ খিয়াম - আইএনবি
সমগোত্রীয় পোস্ট | ফের সেই যোদ্ধার সন্ধানে...

০৬ এপ্রিল ২০১৪

ইচিং বিচিং তিচিং চা । A Native Game

© eon's photography / pap
বরিশালের কলেজ রোডের কলেজ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তুলেছিলাম ছবিটি। সম্ভবত ২০০৫ বা ২০০৬ সালে। এটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো বরিশালেরই আঞ্চলিক দৈনিক আজকের পরিবর্তন’র শিশুদের পাতায়। পরে এটি পুন:প্রকাশ করে দৈনিক ডেসটিনি।  কম্পিউটারাইজেশনের এই যুগে অজস্র মাল্টিমিডিয়া গেমসের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে এমন অজস্র দেশী খেলা। আমাদের সন্তান বা নাতি-নাতনিরা হয়ত এ খেলাগুলোর শুধু নাম শুনবে, আর যাদুঘরে বা বইপত্রে ছবি দেখবে। জানতেও পারবে না- কিভাবে খেলা হত এগুলো।

________________________________________________

https://www.flickr.com/photos/eon_bd/13480234954/

http://yourshot.nationalgeographic.com/photos/3357021/

১৯ ডিসেম্বর ২০১৩

প্রত্যাশা - the expectation


শঙ্কা আর দীর্ঘশ্বাস জাগে। তবু বড় প্রিয় এ ‍দৃশ্য জেলে পল্লীর নারীদের কাছে। তীরের কাছাকাছি মৎস শিকারী নৌযান আসার শব্দ শুনলেই সেদিকে ছুটে যায় ঘরের ছোট্ট বাচ্চারা। ভাবে, সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়া বাবা ফিরলো বুঝি । তাদের ছুটে যেতে দেখে মায়েদের মনেও আশা আর নিরাশা জাগে একই সাথে। তারা একবার ভাবে, কত দিন কেটে গেছে। স্বামী হয়ত আজই বাড়ি ফিরবে। আবার ভাবে, নাহ - দু সপ্তাহের কথা বলে গিয়েছিলো। তা হতে এখনো তিন দিন বাকি। ছেলেটা আজও বাবার কাছে যাওয়ার বায়না ধরে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়বে। এসব ভাবতে ভাবতে অজান্তেই মৃদু বা ভারী দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসে। তাদের নিথর প্রত্যাশা বড় জীবন্ত হয়ে ফুটে থাকে সন্তানদের চোখে । ছবিটি বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর সমুদ্র ঘেঁষা গ্রাম কুয়াকাটা থেকে তোলা।
[Here rises uncertainty and deep sigh. Still this view is very satisfying to the women of fishermen’s quarter. Kids rush to the seashore from their home as soon as they hear the sound of a fishermen's boat near the beach. They think their fisherman father may have returned. While watching them rushing toward the seashore, their mothers also seem hopeful and despair at the same time. They think long time have passed their husbands went to work. May be he will return today. Again they think- No, He said he will return within a couple of weeks. Still three days are left to that couple of weeks to be over. The son insists to go to his father yet and sleeps crying. A long breath comes out while thinking all these. Their tranquil expectations remain lively in the eyes of their kids. This picture was taken at the village ‘Kuakata’ adjoining to the seashore in the coastal district ‘Patuakhali’ of Bangladesh.]
newsreel [সংবাদচিত্র]