ছবিটি ফেসবুক থেকে নেয়া |
দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ১০ নভেম্বর ‘রাবি ও রুয়েটে ইয়াবা ব্যবসায় ৪৪ শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মচারী’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ‘রাবি ঘিরে গড়ে ওঠা ইয়াবা ব্যবসা চক্রের ৩৪ জনকে শনাক্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের মাদক অধিশাখা, যা প্রধানমন্ত্রীর দফতর হয়ে ৭ নভেম্বর রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনারের (আরএমপি) হাতে পৌঁছেছে।’ তবে ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশের পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক জানান, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাদকাসক্ত চিহ্নিত করে কোনো তালিকা তৈরী করেনি। কারা করেছে তা’ও তিনি জানেন না। ওই তালিকাতেই রয়েছে সেলিম রেজা নিউটনের নাম। আরো ছয় শিক্ষককে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যাদের সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় নেই। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি নিউটনকে চিনি। জানি তার সহজিয়া প্রেমিক সত্ত্বার গান, কবিতা আর স্বাধীনচেতা ভাবনার গতিধারা। বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামো তাকে ভয় না পেলেই হয়ত আশ্চর্য হতাম।
তথাপি রাষ্ট্র পরিচালকদের কাছে এ লেখার মাধ্যমে অনুরোধ জানাচ্ছি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের মাদক অধিশাখায় কে বা কারা আছেন বা তারা কার নির্দেশে এই প্রতিবেদন তৈরী করে প্রধানমন্ত্রীল কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন তা একটু খতিয়ে দেখুন। নতুবা এ ঘটনা মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আসতে নিরুৎসাহিত করবে।তাছাড়া প্রতিবেদনটি কোনো যাচাইবাছাই না করেই রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহান যখন বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে এটি গভীর পরিতাপের বিষয়, খুবই উদ্বেগজনক।কর্তৃপক্ষ দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।’ তখন মনে আরো নানা প্রশ্ন জাগে। ভিসির এই অতি উৎসাহের উৎসও খুঁজে বের করা দরকার।
ইত্তেফাকের সেই প্রতিবেদন |
নিউটনের সাথে সর্বশেষ সাক্ষাত হয়েছিলো চলচ্চিত্র নির্মাতা
রাসেল আহমেদের মৃত্যুর ক’দিন পর, গত মে বা জুনে।
|
যারা নিউটনকে চেনেন না তাদের জন্য বলে রাখি, ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি রাবিতে শিক্ষকতা করছেন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তখন ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। আশির দশকে সামরিক-শাসন-বিরোধী ছাত্র-আন্দোলন এবং বলশেভিক-বামপন্থার সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ‘রাজু ভাস্কর্য’ খ্যাত শহীদ মঈন হোসেন রাজু সন্ত্রাসবিরোধী যে ছাত্রমিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছিলেন, সেই মিছিলের অন্যতম মূথ্য সংগঠক ছিলেন নিউটন। ইউনিয়ন ছাড়ার পর ১৯৯১ সালের শেষ দিকে ‘শিক্ষা সংগ্রাম পরিষদ’-এর ব্যানারে ঢাবি’র ‘সাইনে ডাই’ (অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ) প্রথার বিরুদ্ধে স্বাধীন ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন । সেটাই ছিলো ঢাবি'তে শেষ 'সাইনে ডাই'। নিউটন সক্রিয় ছাত্ররাজনীতি ছেড়েছেন মূলত নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পরে। তবে ১৯৯৮ সাল অবধি জড়িত ছিলেন সিপিবি (কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশ) -এর সাথে। রাজশাহী জেলা কমিটির সহ-সভাপতিও ছিলেন। এরই মাঝে তিনি বিস্তৃত করেছেন লেখালেখির ক্ষেত্র। সম্পাদনা করছেন মানুষ ও প্রকৃতি বিষয়ক ছোটকাগজ মানুষসহ আরো অজস্র পত্রিকা।
পূর্ববর্তী পোস্ট :
প্রশ্নবিদ্ধ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা