Powered By Blogger
পুলিশ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
পুলিশ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

০১ অক্টোবর ২০১৭

সন্দেহপ্রবণ, বাঙালী মুসলমানের মন!

ক্যাপশন যোগ করুন
০১.
‘আপনি মুসলমানের ছেলে, আপনার কাছে শিবলিঙ্গ কেন?’ মিরপুরের মাযার রোড সংলগ্ন এলাকায় বসে জানতে চেয়েছিলেন দারুস সালাম থানার এক পুলিশ সদস্য। তাকে সমর্থণ করে আমায় জেরা করেছিলেন তার দুই সহকর্মিও। নাটোর থেকে ঢাকা ফেরার সময় গত ২২ জুলাই সকালে এ ঘটনার মুখোমুখি হই। শিবলিঙ্গটি সাধারণ নয়, কষ্টি পাথরে তৈরী আর আমি পাচারকারী এমন দাবিও তোলে পুলিশ। যিনি আমাকে এটি উপহার দিয়েছেন তার সাথে ফোনালাপের পর তারা নিশ্চিত হন, এটি চেন্নাইয়ে এক মন্দিরের সামনে থেকে সামান্য পয়সায় কেনা হয়েছে। তবুও তাদের প্রশ্নের শেষ নেই। ঘুরে ফিরে বার বার একই কথা, ‘আপনি মুসলমান। আপনার সাথে হিন্দু দেবতার লিঙ্গ থাকবে কেন?’

০২.
‘আপনি মুসলমানের মেয়ে, আপনার কাছে রাধাকৃষ্ণের মূর্তি কেন?’ - কিছুক্ষণ আগে হযরত শাহ্‌জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয়, তথা ডোমেস্টিক টার্মিনালে রাজশাহীগামী এক নারী যাত্রীকে এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এবারও প্রশ্নকর্তা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য; কাস্টমস বা পুলিশের। যাত্রীর সাথে থাকা প্রতিমাটি পাথরেরও নয়, পিতলের। এক্ষেত্রে তাকে কষ্টি পাথর পাচারকারী সন্দেহেরও কোনো কারণ নেই। মূলত তাদের মূখ্য প্রশ্ন, ‘মুসলমান মেয়ের সাথে হিন্দু দেবদেবী থাকবে কেন?’ এমনটা তারা কখনো দেখেননি বলেও জানান।

প্রথম ঘটনাটি প্রায় ভুলে-ই গিয়েছিলাম। মূলত আজকের কাণ্ড এর অতীত পরম্পরা স্মরণ করিয়ে দিলো। যে কারণে গল্প দুটি টুকে রাখাও জরুরী মনে হলো। অন্য ধর্ম নিয়ে বেশী ঘাঁটাঘাঁটি করা যাবে না, এই ফতোয়া কিভাবে জানি জারি রয়েছে বাঙালি মুসলমানের মননে। ধর্মকে জন্মসূত্রে না পেয়ে জ্ঞানসূত্রে পেলে সম্ভবত দর্শনের এহেন দৈন্যতা পয়দা হতো না। তারা মানতে পারে না যে কেউ বলতে-ই পারে, ‘মা যে আমার ফাতেমা / আমার-ই মা শ্রীকালী’।...

প্রথম প্রকাশঃ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

পুলিশ ছাড়া কেউ থাকবে না ...

লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড
‘বইমেলায় মানুষ নাই -
খালি পুলিশ আর পুলিশ’
- অমর একুশে বইমেলায় অবস্থানরত এক কবিবন্ধু মাত্রই বললেন, মুঠোফোনালাপে। তল্লাশীর অতিরিক্ততায় বিরক্ত অনেকে মেলায় না ঢুকেই চলে যাচ্ছেন বলেও তিনি দাবি করলেন। আরেক অনুজ সাংবাদিকের অভিমত, ‘লেখক হত্যা আর প্রকাশক গ্রেফতারের বইমেলা আজ দৃশ্যতই নিরাপত্তার খোলসে বন্দী।’
মূহুর্তে মনে পরে যায় গত সন্ধ্যায় পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের মুখে শোনা কথাগুলো। তিনি অত্যন্ত বিনয় নিয়ে আমাদের বলেছিলেন, ‘আপনারা চলে যান। একটু পরই পুরো এলাকা পুলিশে পুলিশারণ্য হয়ে যাবে। আজ এখানে পুলিশ ছাড়া কেউ থাকবে না।’ অথচ বছরের পর বছর ধরে প্রতিটি ২০ ফেব্রুয়ারির বা মহান একুশের রাত আমরা - সমমনা বন্ধুরা টিএসসি এবঙ আশেপাশের এলাকায় কাটিয়েছি। গান, আড্ডা, শ্লোগান আর মানুষের দৃপ্ত মুখর থেকেছে পুরো এলাকা। এমনকী সেটা পাকিস্তানি ভাবাদর্শের ডানমনা (বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন) সরকার ক্ষমতায় থাকাকালেও। এরপর সকালে শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে, সারাদিন মেলায় কাটিয়ে রাতে বাসায় ফিরেছি। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি - সে সাধ একদমই মিইয়ে দিলো।
পুলিশের সাথে তর্ক করতে ইচ্ছে হলো না। কারণ জানি সে রাষ্ট্রীয় নির্দেশের দাস মাত্র। অর্থাৎ এখন রাষ্ট্রই চাচ্ছে না একুশের রাতটা আমরা এভাবে উদযাপন করি। জানি না রাষ্ট্রের পরিচালকরা ভুলে গিয়েছেন কী’না, একুশ কেবলই আনুষ্ঠানিকতার বিষয় না। এর সঙ্গেই আছে জড়িয়ে আছে এ জাতির, মানে বাঙালের জাতীয়তা বোধের চেতনা।
বাসায় ফিরতে ফিরতে খুব মনে পরছিলো - শৈশবে কাদামাটি বা ইট, কাঠ দিয়ে গড়া শহীদ মিনার, আলপনা আঁকা, ফুল চুরি, খালি পায়ে ছুটোছুটি - আরো কত কী। শুধু বার বার ভুলতে চেয়েছি, এখন এ দেশ চালাচ্ছে স্বাধীনতা যুদ্ধে ‘অফিসিয়ালি’ নেতৃত্বদানকারী দলটিই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই দল আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন ভাবাদর্শের ‘পারপাস সার্ভ’ করছে তা সত্যি, একদমই ভাবতে চাইনি। কারণ আজকাল ভাবতেও ভয় লাগে।
newsreel [সংবাদচিত্র]