Powered By Blogger

২৯ এপ্রিল ২০১৫

আহা কী অর্জন - কারচুপি, বর্জন ...

ধানমণ্ডির সিটি কলেজ সেন্টারে
ভোট দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নগর ভোটের অর্জন
কারচুপি আর বর্জন

- সদ্য সমাপ্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে ওই দুই লাইনের বেশী লেখার কোনো ইচ্ছে ছিলো না। তবুও হঠাৎ মনে হলো এ সংক্রান্ত সংবাদের শিরোনামগুলো অন্তত লিপিবদ্ধ হয়ে থাক। 


তাবিথের এজেন্টকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলল পুলিশ
খেলতে গেলে ফাউল হয়: আনিসুল

কাফরুলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের কেন্দ্র দখল

পুলিশের সিগন্যাল ‘লাইন ক্লিয়ার’
কেন্দ্রের ভেতরে সরকার সমর্থকদের অবাধ চলাচল
চারটার পর ব্যালটে সিল
ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যালট বাক্স ভাঙচুর
জাল ভোট আর সহিংসতায় দক্ষিণের নির্বাচন সম্পন্ন
সংঘর্ষ–ভাঙচুর, ভোট বন্ধ চার ঘণ্টা
অসহায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা
কেন্দ্রে হাজি সেলিম, গোলাগুলি–সংঘর্ষ
টেবিলে সিল মারা ব্যালট
‘ভেতরে “গ্যাঞ্জাম” হচ্ছে, দুইটার পর আসেন’
নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপির বর্জন
ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয় দেখানো হলো ভোটারকে!
‘আপনার ভোট হয়ে গেছে’
চট্টগ্রামে পাঁচটি ওয়ার্ডে সংঘর্ষে আহত ২১
জাল ভোট, নির্বিকার নির্বাচন কর্মকর্তা
দুপুর হতে হতে নির্বাচনটি মারা গেল
রাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হলো

আওয়ামী লীগের গর্জন ও বিএনপির বর্জন

‘উপ্রের নির্দেস, চইল্যা আহো!’

‘জিতব বিএনপি, নিব আওয়ামী লীগ’

অগ্রহণযোগ্য সিটি নির্বাচন
কোথাও শান্তিপূর্ণ, কোথাও সংঘর্ষ

তিন সিটি নির্বাচনে হামলার লক্ষ্য সাংবাদিকেরা

স্বামী ও দেবরকে ভোট দিতে না পেরে দুই নারীর প্রতিবাদ
বিএনপি সমর্থিতদের পোলিং এজেন্ট ও সমর্থকেরা হতাশ
চারটার পরও সিল মারার মহোৎসব

কেন্দ্র দখল করে সিল মারার উৎসব

আনসার সদস্যদের বাইরে ঘোরাফেরার অভিযোগ

উল্লেখিত শিরোনামগুলো দেশের প্রভাবশালী এক দৈনিক পত্রিকার।
এবারে আসুন, আরেকটি অনলাইন মিডিয়ার শিরোনামগুলোয় চোখ বুলিয়ে নিন।
ঢাকার সুরিটোলা কেন্দ্রে হামলা ও ভাংচুর
দখল-বর্জনে অভিযোগবিদ্ধ তিন সিটির ভোট
‘আক্রান্ত’ কেন্দ্রে পুনঃভোটের পরামর্শ জয়ের
চট্টগ্রামে কেন্দ্র দখল করে হাতি মার্কায় ‘ভোট উৎসব’
ভোট জালিয়াতিতে খোদ প্রিজাইডিং অফিসার

পুলিশ নিয়ে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ

মনজুরের ভোট বর্জন, রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা
বিএনপির নির্বাচন বর্জন
বান্ডল ধরে জাল ভোট
ভোট জালিয়াতিতে খোদ প্রিজাইডিং অফিসার
কোনো জবাব দিলেন না সিইসি
সুরিটোলা কেন্দ্রের ভোট স্থগিত
ভোটের আগের রাতেই গুলশানে কেন্দ্র দখলের লড়াই
৬৩৬ কেন্দ্রের ফল, খোকন এগিয়ে
চট্টগ্রামে ৬৪৩ কেন্দ্রের ফলে এগিয়ে নাছির
৭৫০ কেন্দ্রের ফলে আনিসুল এগিয়ে

এবারে আসুন কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ দেখা যাক।















এই নির্বাচন পরবর্তী ভাবনায় প্রকাশিতব্য  গাধার গয়না সিরিজেও এক নয়া পদ্য সংযোজিত হয়েছে। পাঠকদের ভালো লাগুক বা না লাগুক, উল্লেখ করছি লেখাটি। 
টের পাই ষড়যন্ত্র -
বা বিদেশী ধনতন্ত্র
চামে টেপে তোর বুক
আমরাও উজবুক
খুব লাফাই হুদাই
সব দামাল সন্তান
নাকি আদতে ভোদাই
কে ভাবে কী জানি -তবে
ভয় পাসনে মামণি
জানিস’তো এটা
রাজনীতি এমনই
মা বিক্রির কারবার
গণতন্ত্র - স্বৈরাচার

জাল ভোট দেয়ার ছবি তুলতে বাঁধা দিচ্ছেন ক্ষমতাসীনদের সমর্থকরা
পরিশিষ্ট
বিবিসি -এর বাংলা সংস্করণে নির্বাচন সংক্রান্ত সংবাদের শিরোনাম ‘নতুন অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশের রাজনীতি?’ -প্রতিবেদনটিতে তারা লিখেছে - “গত বছর ৫ই জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন বয়কট এবং এ বছর টানা কয়েক মাস ধরে সহিংস আন্দোলনে ক্ষান্ত দিয়ে বিএনপি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়। অনেকেই মনে করছিলেন যে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে হয়তো রাজনৈতিক অচলাবস্থার বরফ গলার একটা সুযোগ তৈরি হলো। কিন্তু আজ বিরোধীদের ভোট বয়কটের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি যে নতুন একটি অনিশ্চয়তায় পড়লো এনিয়ে খুব একটা সন্দেহ নেই।”

২১ এপ্রিল ২০১৫

ইসলামে ‘বেপর্দা’ নারীও নিরাপদ

বঙ্গাব্দ বরণ, তথা বাংলা নববর্ষ উদযাপনকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসটি চত্ত্বর সংলগ্ন
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে নারীদের বস্ত্রহরণ ও শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে উত্তাল সারাদেশ।
ছবিটি বরিশালের।
ইসলামী ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরীফের কোন সূরার কোন আয়াতে কম কাপড় পরিহিত - ‘বেপর্দা’ (পর্দা না মানা) নারীদের বিবস্ত্র করার কথা বলা আছে? এমন কোনো নির্দেশ রয়েছে ঠিক কার বর্ণিত হাদিসে? কোনো নারী ইসলাম বা ইসলামী আদেশ না মানলেই কি মুসলমান পুরুষ তার বস্ত্রহরণের অধিকার পেয়ে যায়? নাকি এ মহান ধর্মে যে কোনো নারীই নিরাপদ?
***
পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারা -এর ১৮৭ নম্বর আয়াতে নারী ও পুরুষের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেছেন, “তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ], তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ]।” অর্থাৎ পুরুষ ও নারীকে পরস্পরের পোশাক বলছে ইসলাম। সেই নারীর বস্ত্রহরণে যে পুরুষেরা মহান আল্লাহর নামে শ্লোগান দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন, তারা কি আদৌ মুসলমান? নাকি ইসলামকে কলুষিত করার বিধর্মী কৌশলে পথভ্রষ্ট কোনো গোষ্ঠী? তারা কী জানে না যে সূরা নূর -এর ৩০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন, “(হে নবী) মোমিন পুরুষদের বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনমিত রাখে এবং যৌন পবিত্রতা রক্ষা করে চলে। এটাই তাদের জন্য পবিত্রতম পন্থা। নিশ্চয়ই তারা যাহা কিছুই করে, আল্লাহ তৎসম্পর্কে পরিজ্ঞাত।” - নাকি তারা নেহাতই জন্মসূত্রে মুসলমান? যারা কখনো কোরআন বোঝার তাগিদই অনুভব করেনি। যুগে যুগেই যে এরা থাকবে সে ইঙ্গিতও রয়েছে সূরা বাকারা -এর তিনটি আয়াতে। আয়াতগুলো জেনে রাখুন-
০৮। মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা বলে 'আমরা আল্লাহ্‌ ও শেষ দিবসে বিশ্বাস করি'। কিন্তু তারা [প্রকৃতপক্ষে] বিশ্বাস করে না। ০৯। আল্লাহ্‌ ও বিশ্বাসীদের তারা প্রতারিত করতে চায়, কিন্তু [এর দ্বারা] তার শুধুমাত্র নিজেদের প্রতারিত করে অথচ তারা [তা] বুঝতে পারে না। ১০। তাদের অন্তরে রয়েছে ব্যাধি; এবং আল্লাহ্‌ তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন; তারা [ভোগ করবে] নিদারুণ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাবাদী।”

***
পহেলা বৈশাখ, ১৪২২। বাংলার ইতিহাসে এক কলঙ্কিত দিন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে নিশ্চয়ই। এ দেশেরই এক শ্রেণীর (অ)-মানুষ ইসলামের দোহাই দিয়ে সেদিনের সংঘবদ্ধ যৌনত্রাসের পক্ষে অবস্থান নিয়ে নারীদের যেভাবে দোষারোপ করছেন, তাতে এক মুসলিম পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি অন্তত বিব্রত। কারণ পবিত্র কোরআন কখনোই এমন বাড়াবাড়িকে সমর্থন করে না। স্বদেশী মুসলমানদের এই গোমরাহের পথ থেকে ফেরানোর তাগিদ অনুভব করেই এ লেখাটি তৈরী করতে বসেছি। আল্লাহ আমাকে এটি সম্পন্ন করা তওফিক দেবেন, সে ঈমানও রয়েছে। কারণ নিশ্চয়ই এসব তারই নির্দেশে হচ্ছে। চলমান পরিস্থিতিতে বিচলিত মন নিয়ে তাই কোরআন, হাদিসেই দিয়েছি ডুব। আর খুব খেয়াল করে দেখেছি, সর্বজ্ঞ আল্লাহ বহুবার সেইসব পথভ্রষ্টদের সতর্ক করে দিতে চেয়েছেন, যারা নারীর পোশাকের দোহাই দিয়ে যৌন সন্ত্রাস চালানোকে হালাল করতে চেয়েছে, চাচ্ছে এবং চাইবে। যেমন সূরা নিসা -এর উল্লেখিত আয়াতে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন ‘পুরুষদের বলে দিন’। আবার আমাদের নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো অপরিচিত নারীর প্রতি যৌন লোলুপ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, কিয়ামতের দিন তার চোখে উত্তপ্ত গলিত লৌহ ঢেলে দেওয়া হবে (ফাতহুল কাদির)।” এখনো কারো কী মনে হচ্ছে না বৈশাখের বস্ত্রহরণকারীরা কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কাজ করেছে। আর তাদের সমর্থন করে ওই সুমহান গ্রন্থ এবং নবীকে কলঙ্কিত করেছন একদল বিভ্রান্ত অনুসারী। এ বিভ্রান্তির দায় কার, সে আলোচনায় পরে আসছি।

***
পহেলা বৈশাখের ওই ঘটনা পর যারা বলেছেন -
-‘আলহামদুলিল্লাহ - এটা আল্লাহর পক্ক (পক্ষ) হতে।’
- ‘এটা ইসলাম থেকে দূরে যাওয়ার ফল।’
- ‘ইসলামের বাইরে গেলে এমনি হবে।’
- ‘যে নারী , পরপুরুষকে দেখানোর জন্য সেজে বের হয়, তাদের জন্য এটাই পাওনা !’
- ‘ওখানে (বর্ষবরণে) না গেলে কী হয় না! এর জন্য মেয়েরাই দাই (দায়ী)।’
- ‘তোমাদেরকে আল্লাহ বেইজ্জতি না করে ছেড়ে দিবে ভেবেছ?’
- ‘আধা বিবস্ত্র নারী পুরা বিবস্ত্র হবে এটাই স্বাভাবিক।
তারাই একটু ভেবে দেখুন তো - আমার দয়াল মহানবীর একজন উম্মত হয়ে তার দরবারে দাঁড়িয়ে আপনারা এই কথাগুলো বলতে পারতেন কি? নাকি আগে নিজের বিরুদ্ধে, আপন কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জেহাদ করার কথা ভাবতেন।
***
হে মুমিন মুসলমান ভাইয়েরা, সেদির ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজে দেখলাম বোরখা পরিহিত এক নারী তার শরীরে হাত দেয়ার অপরাধে একজনকে চড় দিচ্ছে। অর্থাৎ পর্দাশীল নারীরাও সেদিন শ্লীলতাহানীর হাত থেকে রেহাই পাননি। এরপরও আপনারা (ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা) বিষয়টি এড়িয়ে যাবেন কি? আপনাদের আরো স্মরণ করিয়ে দেই সূরা নিসা –এর ৭৫ নম্বর আয়াত। যেখানে আল্লাহ বলছেন, "তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা আল্লাহর পথে লড়াই করছ না অসহায় নারী,পুরুষ ও শিশুদের রক্ষার জন্যে? যারা বলে হে আমাদের প্রতিপালক! জালেমের এই জনপদ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর। তোমার কাছ থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক কর এবং তোমার কাছ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী পাঠাও ৷" পরের আয়াতেই তিনি বলেন, "যারা বিশ্বাসী তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে এবং যারা অবিশ্বাসী তারা তাগুত বা অসত্যের পক্ষে যুদ্ধ করে ৷ সুতরাং তোমরা শয়তানের অনুসারী ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর ৷ নিশ্চয় শয়তানের কৌশল দুর্বল৷"
সাম্প্রতিক সংবাদ
***
উপরের শেষ আয়াতটি একটু গভীর ভাবে লক্ষ্য করুন। আল্লাহ সেখানে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে - "ঈমানদাররা শুধু আল্লাহর ধর্ম রক্ষা এবং তা শক্তিশালী করার জন্য যুদ্ধ করে, ক্ষমতা বা পদের জন্য নয়৷ মুমিনের জন্য শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি যথেষ্ট ৷ কিন্তু কাফেররা খোদাদ্রোহী শক্তি ও জালেমদের শাসন শক্তিশালী করার জন্য যুদ্ধ করে। তাদের লক্ষ্য অন্যদের ওপর কর্তৃত্ব করা এবং নিজ দেশের সীমানা বৃদ্ধি করা।" একটু ভেবে দেখুন, আজ ইসলামকেও অমনই এক চেহারা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে কী’না। মুসলমানদের উগ্রপন্থী হিসাবে প্রতিষ্ঠার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে কেউ কিছু করছেন কী’না – সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকুন। ইসলামকে ধ্বংসের উদ্দেশে কারা এর নামে বিশৃঙ্খলা তৈরী করছে, সে ব্যাপারে সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। ষড়যন্ত্রকারীদের গোয়েন্দা তৎপরতায় প্রসূত আলেম, ওলামাদের বয়ানে বিভ্রান্ত না হয়ে কোরআনের শিক্ষায় আলোকিত হোন, আত্মপোলদ্ধি জাগান। আর অবশ্যই মনে রাখবেন, সীমালঙ্ঘন বা বাড়াবাড়ির ব্যাপারে মহান আল্লাহ বার বার সতর্ক করেছেন। আর আমাদের প্রাণের নবী মোহম্মদ (সঃ) তার বিদায় হজের ভাষনে বলেছেন, “সাবধান! ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কোরো না। এমন বাড়াবাড়ির কারণে অতীতে বহু জাতি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।”

সিসিটিভির ফুটেজে সুবাদে চিহ্নিত যৌন সন্ত্রাসীরা
***
সূরা হুজরা’তে আল্লাহ বলছেন, “হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে এবং তোমাদেরকে পরিণত করেছি বিভিন্ন জাতিতে ও বিভিন্ন গোত্রে, যাতে তোমরা পরস্পরকে চিনতে পার।” - অর্থাৎ কোরআনের বক্তব্য অনুযায়ী - মানুষ যে বিভিন্ন জাত, মত বা গোত্রে বিভক্ত, এটা খোদারই ইচ্ছায়। এই বিভেদ এখন যেমন আছে, আগেও ছিলো। কিন্তু আপনি কি এমনটা কখনো শুনেছেন - আমাদের প্রিয় মহানবীর যমানায়, তার খেলাফতে বসবাসকারী/ভ্রমণরত কোনো বিধর্মী জনগোষ্ঠী/উপজাতির বেপর্দা নারী তৎকালের মুসলমানদের দ্বারা নিগৃহীত হয়েছে? শোনার কথা নয়। কারণ মুসলিম মূল্যবোধ তখনও দূষিত হওয়ার সুযোগ পায়নি। বরং মুসলমানদের চারিত্রিক গুনের মোহে বিমোহিত হয়েও ইসলামের ছায়া তলে এসেছিলো মানুষ। সূরা বাকারা -এর ৬২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট বলছেন - “যারা ঈমান আনে [এই কোরআনে], এবং যারা ইহুদীদের [ধর্মগ্রন্থ] অনুসরণ করে, এবং খৃশ্চিয়ান, এবং সাবীয়ান, যারাই ঈমান আনে আল্লাহ্‌র [একত্বে] শেষ [বিচার] দিবসে এবং সৎ কাজ করে, তাদের জন্য পুরষ্কার আছে তাদের প্রভুর নিকট। তাদের কোন ভয় নাই তারা দুঃখিতও হবে না।” অর্থাৎ ইসলাম শুধু মুসলমানদেরই সুখবর দেয়না, অন্যান্য কিতাব অনুসারীদেরও তাদের কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দেয়। স্মরণ করিয়ে দেয় ভালো কাজের ইনাম। তবে ধর্ম রক্ষা বা প্রচারের নামে হানাহানিকে ইসলাম সমর্থন করে না। একই সূরার ১৯০ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে, “আল্লাহর ওয়াস্তে লড়াই কর তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।”

***
ইসলামে নারীর মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে বিশ্বব্যাপী এমনভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে যাতে মনে হয়, প্রচলিত ধর্মগুলোর মধ্যে কোরআনেই নারীকে সবচেয়ে বেশী অবমাননা করা হয়েছে এবং সবচেয়ে কম অধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকে এই অপপ্রচার বিশ্বাসও করছেন, কোরআন যাচাই করে বা না করেই। যারা এমন প্রচার চালিয়েছে বা চালাচ্ছে তাদের নিশ্চয়ই কোনো অসৎ কোনো উদ্দেশ্য আছে। সে আলাপে যাচ্ছি না, বা এ বিষয়ে কারো কোনো বিশ্বাসেও আমি আঘাত হানতে চাইছি না। শুধু আরো কিছু আয়াত উল্লেখ করে যাচ্ছি -
সূরা আন-নাহল এর ৯৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,  “যে ভাল কাজ করে এবং বিশ্বাসী, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, আমি তাকে অবশ্যই দান করব এক পবিত্র শান্তিময় জীবন এবং তারা যা করত তার জন্য তাদেরকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।” কোরআনের ৪০ নম্বর সূরা আল-গাফির -এর ৪০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে - “যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করে সে কেবল তদনুরূপ প্রতিফল পাবে। আর যে ব্যক্তি ভাল কাজ করে সে পুরুষই হোক কিংবা নারীই হোক, সে যদি বিশ্বাসী হয় তবে এরূপ লোকেরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেথায় তাদেরকে দেয়া হবে বেহিসাব রিযিক।” আর সূরা লুকমান -এর ১৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “আমি মানুষকে তার মাতা-পিতা সম্বন্ধে নির্দেশ দিয়েছি তাদের সাথে সদাচরণ করতে। তার মাতা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং দু’বছরে তার দুধ ছাড়ানো হয়। সুতরাং শোকরগুজারী কর আমার এবং তোমার মাতা-পিতার।”

সূরা নিসা -এর সাত নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “পুরুষদের জন্য অংশ আছে সে সম্পত্তিতে যা পিতা-মাতা ও নিকট-আত্মীয়রা রেখে যায়; এবং নারীদের জন্যও অংশ আছে সে সম্পত্তিতে যা পিতা-মাতা ও নিকট-আত্মীয়রা রেখে যায়, হোক তা অল্প কিংবা বেশী। তা অকাট্য নির্ধারিত অংশ।” ১৯ নম্বর আয়াতে রয়েছে - “হে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের জন্য বৈধ নয় নারীদের জবরদস্তি উত্তরাধিকার গণ্য করা। আর তাদের আটকে রেখ না তাদের যা দিয়েছ তা থেকে কিছু আত্মসাৎ করতে, কিন্তু যদি তারা কোন প্রকাশ্য ব্যভিচার করে তবে তা ব্যতিক্রম। তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে জীবনযাপন করবে।” একই সূরার ৩২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন, “পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার প্রাপ্য অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার প্রাপ্য অংশ।” এছাড়া আন-নূর -এর চার নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “যারা কোন ভাল নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারপর চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই প্রকৃত দুষ্ট ও মিথ্যাবাদী।”

সূরা আল-আহযাব -এর ৩৫ নম্বর আয়াতে আল্লাজ “নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনয়ী পুরুষ ও বিনয়ী নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোজাদার পুরুষ ও রোজাদার নারী, স্বীয় লজ্জাস্থান হেফাযতকারী পুরুষ ও স্বীয় লজ্জাস্থান হেফাযতকারী নারী এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও অধিক স্মরণকারী নারী–এদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান।”
সহোদরা | © eon's photography
***
অতএব হে বাংলার মুমিনগণ, সচেতন হন। সতর্ক করে দিন আপনার সকল মুসলমান ভাইকে। যাতে তারা ইসলামের নামে অনৈসলামিক কিছু করে আমাদের প্রিয় নবীকে লজ্জিত করার সুযোগ না পায়। মনে রাখবেন, কোরআনে পুরুষ ও নারী শব্দটি সম্ভবত সমসংখ্যক বার উল্লেখ করা হয়েছে। আর আমাদের মহানবী (সঃ) এ’ও বলেছেন, “এ কথা সত্য যে, নারীদের উপর পুরুষের যেমন কিছু অধিকার আছে তেমনি পুরুষের উপরও নারীদের কিছু অধিকার আছে।” আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে শেষ করছি। পবিত্র কোরআনে নিকাব-সহ প্রচলিত বোরখার কোনো ইঙ্গিত আমি পাইনি। হিজাবের ক্ষেত্রে খোদ মুসলিম স্কলারদের মধ্যেও দ্বিমত রয়েছে। বেশীরভাগ স্কলার কোরআনের আলোকে হিজাবকে সমর্থন করেন। তবে আরেকটি পক্ষ মনে করে কোরআনে নারীদের পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে কিছু স্বাধীনতা ও নমনীয়তা রাখা হয়েছে যেটা দেশ-কাল-পাত্র ভেদে কিছুটা পরিবর্তনশীল হতে পারে।

১৬ এপ্রিল ২০১৫

বর্ষবরণে বস্ত্রহরণ কী পরিকল্পিত!

 Women in Bangladesh
© eon's photography / pap
বঙ্গাব্দ বরণ, তথা বাংলা নববর্ষ উদযাপনকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসটি চত্ত্বর সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে নারীদের বস্ত্রহরণ ও শ্লীলতাহানির যে ঘটনা ঘটেছে সে সম্পর্কে কুয়েত প্রবাসী আবু আশরাফ কাজী বলেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ - এটা আল্লাহর পক্ক (পক্ষ) হতে।’ চট্টগ্রামে বসবাসকারী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সালমান আব্দুল্লাহ আরো এক কাঠি সরেস। তার মন্তব্য, ‘এটাই চাইছিলাম, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তাদেরকে আরো লাঞ্ছিত হওয়ার তাওফিক দিন।’ সৌদি প্রবাসী আবু ইউসুফ বলেছেন, ‘যারা এই কাজটি করেছে তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। এই মেয়েদের এটাই পাওনা ছিলো!’ দিনাজপুর সরকারি কলেজের ছাত্র মোহাম্মদ মিজান মনে করে, ‘নিজেকে ভোগের পন্যের মত উপস্থাপন করলে - শ্লীলতাহানী হতেই পারে।’ আর বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) এর ইলেট্রিসিয়ান রাইহান হোসাইন -এর অভিমত আরো ভয়ংকর। তার বক্তব্য, ‘চুদে ফাটিয়ে দেয়া উচিত।’ কী, আঁতকে উঠলেন। ওঠারই কথা। পহেলা বৈশাখের অমন পৈশাচিক ঘটনাকে আল্লাহর নেয়ামত মনে করে উল্লাসিত হওয়া অজস্র মানুষ স্বজাতি জেনে আমিও আতঙ্কিত।

আমার দেশ অনলাইনের ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া স্ক্রিনসট
জ্ঞানসূত্রে নয়, জন্মসূত্রে পাওয়া ইসলামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ বা উগ্র ধর্মান্ধ এই গোষ্ঠী নারীকে আজও পর্দাবন্দী দেখতে চায়। তাদের দৃষ্টিতে নববর্ষ উদযাপনও ধর্মবিরোধী। যে কারণে বস্ত্রহরণ ও শ্লীলতাহানির পক্ষে সাফাই গেয়ে আর উল্লাস করেই তারা ক্ষান্ত নন। লাঞ্চিতদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সেদিনের দলবদ্ধ যৌন সন্ত্রাসীদের বাহবা দিতেও তারা সরব। তাদের মতে, বঙ্গাব্দ বরণকারী পুরুষদের হত্যা বা নারীদের বিধর্মী জ্ঞানে ‘গণিমতের মাল’হিসেবে গণ্য করা জায়েজ। একই চেতনায় ২০০১ সালে ঢাকার রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা করে হত্যা করা হয়েছিলো ১০ জনকে। যে কারণে এবারও যে ঘটনা ঘটেছে - সেটা কোনো সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ কি’না - তা অবশ্যই ভাবা উচিত । একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, বেশ ক’দিন আগে থেকেই বর্ষবরণ উদযাপন ইসলাম বিরোধী বলে অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালিয়ে আসছে এই গোষ্ঠী। এরই ধারাবাহিকতায় ‘অপারেশন ভুভুজেলা’ চালানো হয়েছে কি’না - তা’ও খতিয়ে দেখা দরকার।
আরো একটি স্ক্রিনসট
নানা ঘটনায় আলোচিত গণমাধ্যম আমার দেশ অনলাইন - বিশেষ গোষ্ঠীটির অলিখিত মুখপাত্র হয়ে উঠেছে। তাদের ফেসবুক পেইজে আলোচ্য ঘটনার সংবাদ সংযোগে উল্লেখিত মন্তব্যগুলো লিখেছেন সংশ্লিষ্টরা।  আরো শত শত অমন মন্তব্য রয়েছে সেখানে।  এর মধ্যে রিসান এম তারেক  আলোচ্য ঘটনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তার মন্তব্য ছিলো - ‘থ্যাংকস ভাই খবরটা দেয়ার জন্য। ঘটনার বাস্তব সাক্ষী আমি।’ হে মহান পুলিশ ভাইয়েরা, আপনাদের জন্য অন্তত একজন সাক্ষীর সন্ধান রেখে গেলাম। এখানে আরো কতিপয় মন্তব্য উল্লেখ করছি -

রাজশাহী কলেজের ছাত্র তানভীর কবির বলেছেন, ‘হে জাতি শুনে রাখ, এটা ইসলাম থেকে দূরে যাওয়ার ফল।’ ইতালী প্রবাসী আনোয়ার হোসেইন লালন এর মন্তব্য, ‘আল্লাহ্ নিষেধ করেছেন এসব আকাম কুকাম করতে। তোমরা নারীরা যখন শুনবে না, কি আর করার। যাও - ঘরের বাহিরে যাও ছেলে বন্দুদের (বন্ধুদের) সাথে আনন্দ করো, কাদঁছ কেন এখন?’ চট্টগ্রামের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র শফিকুল ইসলাম স্বপন বলেছেন, ‘করবে না কেন? ঢলা খাওয়ার জন্যই যায়, ঢলা দিয়ে দিছে - এতে তো খুশী হবার কথা। এদের লজ্জা কোনোদিন হবে না। আবার দেখবেন আগাম বছর ঐ মেয়েগুলোই নববর্ষ পালন করতে যাবে। আমার মনে হয় উচিত প্রাপ্য পাইছে।’

বর্ষবরণ উদযাপন ইসলাম বিরোধী বলে প্রচারে যা বলা হচ্ছে ...
শিশির ভেজা রাজকন্যা নামের একটি আইডি থেকে লেখা হয়েছে, ‘বেশি বাঙ্গালীয়ানা ফলাতে গেলে এটাই হয়।’ আরব আমিরাত প্রবাসী মহিম উদ্দিন লিখেছেন, ‘এরই নাম বৈশাখী পূজা।’ ময়মনসিংহের সরকারি চাকুরে মাহমুদুল হাসান রাসেল লিখেছেন, ‘এই তো পয়েলা বৈশাখ পালনের মর্মকথা বেরিয়ে আসছে।’ চট্টগ্রামের মো. তোহা -এর দাবি, ‘কিছু মনে করার কি আছে? অসাম্প্রদায়িক এবং বাঙ্গালী চেতনায় অতি অনুপ্রাণিত হলে, মাঝে মধ্যে এরকম হতেই পারে, চেতনা বলে কথা!’ যশোরের আব্দুল জলিল লিখেছেন, ‘এই দেশে ইসলামিক আইন চালু হলে এই সব অপকালচার থাকবে না ইনশাআল্লাহ।’ এমন মন্তব্য আরো অজস্র রয়েছে। ঢাকা সিটি কলেজের সাবেক ছাত্র নাইম আহমেদ লিখেছেন, ‘ইসলামের বাইরে গেলে এমনি হবে। এত কেবল শুরু।’ সিঙ্গাপুর প্রবাসী নজরুল নাজির -এর মন্তব্য, ‘যেমন কর্ম তেমন ফল। মাগিরা বর্ষবরণ চোদায়।’ চট্টগ্রামের মনুয়ার আল ইসলাম বলেছেন, ‘তথাক‌থিত সু‌শীল সমাজ বাংলা সংস্কৃ‌তির না‌মে যারা বাংলা নবর্বষ‌কে যারা বেহায়াপনায় রুপ (রূপ) দি‌য়ে‌ছে - তা‌দের মা-বোন‌কে রাস্তায় এনে এভা‌বে উলঙ্গ করা দরকার।’
এখানে একটু বলে রাখি, এই দেশে এমন ঘটনার সামাজিক প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে, তা বোধকরি সহজেই অনুমেয়। কারণ এর উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে। ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতের সেই বাঁধন ট্রাজেডি অনেকেরই মনে আছে আশাকরি। সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনেই তার শ্লীলতাহানি হয়েছিলো। সেই ঘটনার পর থেকে খ্রীস্টাব্দ উদযাপনে যে কড়াকড়ি আরোপ হয়েছে তা আজও শিথিল হয়নি। প্রতিটি ৩১ ডিসেম্বরের রাতে রাজধানী ঢাকা হয়ে যায় পুলিশী চেকপোষ্টের নগরী। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে তাদের প্রধান দূর্গ।  রাষ্ট্রের মতো কড়া হতে বাধ্য হয়েছে প্রতিটি পরিবারও।
এদিকে এবারের ঘটনাটিকে ইসলামের আদেশ না মানার কুফল হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ওই গোষ্ঠী লাঞ্চিত নারীদের যাচ্ছে তা বলতেও কুণ্ঠিত হচ্ছেন না । রংপুরের রেজাউল করিম রাজ লিখেছেন, ‘নারীরা যেদিন ন্যাংটা হয়ে বেরাতে পারবে সেদিন তারা বলবে যে তারা স্বাধীন।’ আরব আমিরাত প্রবাসী মোঃ জসিম উদ্দিন লিখেছেন, ‘এইটাকে বলে নারীর সাধীনতা (স্বাধীনতা)। নারী পুরুষ এক সাথে বেহায়াপনার নাম জদি (যদি) হয় নারীর সমান অধিকার, আমার বলার কিছুই নাই। এর জন্য দাই (দায়ী) আমাদের দেশের শাসক গুষ্ঠী (গোষ্ঠী)। আমরা কিসের মুসলমান, সেরেপ (স্রেফ) নামের মুসলমান।’ সিলেটের মোঃ সুমন আহমেদ -এর অভিমত, ‘এই সব যারা পালন করে তারা আর যাই হোক কোন (কোনো) ভাল ঘরের মেয়ে নয়।’
সোনাগাজীর এম এ নুরুল হুদা  -এর বক্তব্য, ‘ছেলেগুলাতো না হ্য় কুকুর, কিন্তু যে মেয়েগুলা বুকের মাংস পুলাইয়া (ফুলিয়ে) এসব নোংরামি করার জন্য বের হ্য়, তখন তাদের মায়েরা কোথায় থাকে? এই সব বাজে মেয়েরা হ্চ্ছ ওই কুকুরগুলার খাদ্য এখানে দোসের (দোষের) কিছু নেইভবিষ্যতে আরো বেশি করা দরকার ।’ ঢাকার মিরপুরের মাদ্রাসা শিক্ষক শারফুদ্দীন ইয়াহইয়া কাসেমী লিখেছেন – ‘যে নারী গিয়েছে আর যে বখাটেরা যা করেছে, এতে আশ্চর্য হবার কি!? উভয় লিঙ্গ একই চরিত্রের। নগ্নতা, বেহায়াপনার কালচার গ্রহণ করলে এমনই দৃশ্য বার বার আসবে।’ সিলেটের সৈয়দ চালিক আহমেদ গুলশান বলেছেন, ‘যে নারী , পরপুরুষকে দেখানোর জন্য সেজে গুছে বের হয় ! তাদের জন্য এটাই পাওনা ! যেমন কর্ম তেমন ফল !!’
ফতুল্লার ফেরদৌস রহমান রাসেল -এর বক্তব্য, ‘নাস্তিকরা যে ভাবে দেশটাকে পাপে লিপ্ত করার কাজে নিয়োজিত রয়েছে তাতে এমন হওয়ারই কথা! কারন সরকার ওয়াজ মাফিল বন্ধ করে, আর নাচ গানে মগ্ন রাখার চেষ্টা করে সব সুবিধা দিয়ে!’ নোয়াখালীর  শামীম হোসাইন লিখেছেন - ‘আজ ৪/৫ বতসর (বছর) ঢ়াকা বিশ্ববিদ্যালয় টি এস ছি (টিএসসি) যৌন পললিতে (যৌনপল্লীতে) রূপান্তরিত হয়।’ হা-মীম এসোসিয়েটস’র ডিরেক্টর (ফিন্যান্স)  মুঃ মোরশদ উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘এই কানকি গুলা (খানকিগুলো) ওখানে যাইতো (যায়ই’তো) লেংটা হওয়ার জন্য।’ মাদারীপুরের সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের ছাত্রী সেঁজুতি লিমা -এর বক্তব্য, ‘শিয়াল কুকুরদের মাঝে গেলে যা হয় তাই হয়েছে। দোষের কি আছে? জাতির কাছে প্রশ্ন।’
এসব মন্তব্যে বাঙাল বোধের যে চিত্র স্পষ্ট, তা পীড়াদায়ক।
কী, ক্লান্ত হয়ে গেলেন। আরো পড়ুন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মর্ত মোহাম্মদ জাফর বলেছেন, ‘মহিলারা থাকে ভিতরে। বাহিরে গেলে এই রকম হয়।’পাকিস্তান প্রবাসী তাসনীম হাসান আমানী লিখেছেন, ‘এরপরও লজ্জাহীন নারীদের চেতনা আসবে না?’ কুয়েত প্রবাসী মাহবুব আলম লিখেছেন, ‘যে নারী পর পুরুষকে দেখানুর (দেখানোর) জন্য সেজে গুছে বের হয়! তাদের জন্য এটাই পাওনা! যেমন কর্ম তেমন ফল !!’ শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমাদ বলেছেন, ‘পাওয়ার জন্য গেছে. দেওয়ার যারা তারা দিছে। হারাম কাজ ত এইভাবে চলে।’ চট্টগ্রামের খান মো. জহির দাবি করেছেন, ‘যৌনকর্মীরা সবসময় সবখানে লাঞ্চিত অপমানিত অপদস্ত হবেই। যদি ইসলামের রীতিনীতি মেনে চলত তাহলে এসব ফালতু অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজের দেহ প্রসারণ করে বিড়াম্বনার স্বীকার হত না।’
ঢাকার মালেক আফসারী বলেছেন, ‘আমাদের মনে রাখা উচিত যে-তা হলো মধু যদি ঢেকে রাখা না হয় তাতে মাছি বসবে এটাই সত্য । আর সোনার ছেলেরা তাতে একটু খুলে টেষ্ট করছে এতে আমি বরং সোনার ছেলেদের ধন্যবাদ জানাই, শেষ কথা আমাদের দেশের ঐ রকম মহিলাদের তাই হওয়া উচিত।’ মক্কা প্রবাসী  আতিক রাহমান বলেছেন, ‘ইসলামের মধ্যে নারী জাতিকে সব চাইতে বেশী সম্মান দিয়েছে, আর পুরুষ কে দিয়েছে স্বাধীনতা। আর সেই স্বাধীনতা যদি নারী জাতি টানা টানি করে তাহলে এর চাইতে বেশির চাইতে বেশি নির্যাতিত হবে। তাই আমাদের কে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে হবে। সেই অনুযায়ী চলতে হবে। মনে রাখবেন - জানা এবং মানার মধ্যেই সব কিছু ! আপনি না জেনে আমল করতে পারবেন না।’ রাজশাহীর দোগাছির মোঃ আয়াতুল্লাহ খামোনি বলেছেন, ‘কলা যদি ছিলা থাকে মাছি তো ধেন ধেন করবেই। যে অনুষ্ঠানে গেসে এটা তো simple (সাধারণ) ব্যাপার। যে নারী ইসলাম ধর্ম মেনে চলবে সে কখনো এই ভাবে যৌনহয়রানী হবে না।

বঙ্গাব্দ বরণ বিরোধী প্রচারণায় ব্যবহৃত ট্রল।
ওবায়েদ ইসলাম লিখেছেন, ‘নাউযুবিল্লাহ মিন যালেক।  কোনো মেয়ের ইজ্জতের বিনিময়ে এই ১লা বৈশাখ আসার কোন দরকার ছিল।’  জিয়া উদ্দিন রাসেল এর অভিমত, ‘প্রকাশ্যে ধর্ষন করলেও অবাক হতাম না। এসব মেয়েদের এসবই প্রাপ্য। বি. ইউ. কোরশী  লিখেছেন, ‘ঘরের মেয়ে, রাস্তায় নামছে বলেই তো পরের ছেলে নষ্টামি করতে পারছে।’ মোঃ রুহুল লিখেছেন, ‘প্রগতি নারীবাদী বেশ্যারা কোথায়। এরা ইসলামের শত্রু মানবতার শত্রু।’
মঈন মুহম্মদ লিখেছেন, ‘এই গনমাধ্যমগুলা আসলেই বেরসিক। এইসব জশনে তো এমন ঘটনা ঘটবেই। আর এমন ঘটনা ঘটানোর জন্যই তো ঐসব মেয়েরা উপস্থিত হয়েছিল সেখানে। কই ঐসব মেয়েরা তো বলেনি আমাদের সাথে খুব খারাপ অনাকাক্ষিত কিছু ঘটেছে, তাইলে বেরসিক গনমাধ্যমের এত চুলকানি কেন?’ রেজাউল ইসলাম বলেছেন, ‘একেই বলে মুক্ত মনের মানুষ! মনের সাথে সাথে নিজের শরীরটাও উন্মুক্ত করে রাখল। নিজেকে খোলা মেলা রাখাটাই তাদের ধর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর যে কোন ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলাটা তাদের ফ্যাশন।’

মোঃ শামীম আহমেদ
বলেছেন, শ্লীততাহানী বর্তমান সমাজের একটা ঐতিহ্য। মামুনুর রশীদ বলেছেন, ‘ভাল হইছে, যেন এই কথা মনে করে আর কোথাও যেন পর্দা ছাড়া না যায়।’ আবু বকর বলেন, ‘এরা কোন সভ্য ঘরের মেয়ে নয়, আর হয়রানি কারিরা তো তথাকথিত আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত জানোয়ার। হাসিনার সোনার ছেলে।’

এক চুতিয়ার স্ট্যাটাস
আনিসুর রহমান বলেছেন, ‘সবেতো শুরু, যেভাবে বিজাতীয় সংস্কৃতি আমাদের কে গ্রাস করছে তাতে করে আর বেশিদিন এমন থাকবে না, এমন ঘটনা প্রতিদিন ঘটতে থাকবে। কোথায় আমাদের অতি পরহেজগার প্রধানমন্ত্রি, উনি কি বোঝেন কেন এগুলো হচ্ছে? যেখানে নাস্তিকদের পক্ষে কথা বলার লোকের অভাব হয়না, নারী স্বাধীনতার কথা বলে নারীর প্রকৃত স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না এমন নারীনেত্রীরা। সেখানে এ ধরনের ঘটনা স্বাভাবিক। মাঝে মাঝে মনে হয়, শুস্থ (সুস্থ) সাভাবিক জীবন ছেড়ে অস্বাভাবিক জীবনে চলে যায়, এই কুত্তাগুলোকে টুকরা টুকরা করে কাটি। আমারও একটি মেয়ে আছে, আজ যে মেয়েটির সাথে এমন আচরন করা হয়েছে, তার বাবা মার মনের অবস্থাটা কি একবার ভাবুন, এখনো সময় আছে সচেতন মানুষকে ঘুম থেকে জেগে উঠতে হবে। নইলে আমরা অচিরেই অন্ধকারে হারিয়ে যাব।’

আব্দুল খালেক বলেছেন, ‘নগ্নতা, বেহায়াপনার কালচার গ্রহণ করলে এমনই দৃশ্য বার বার আসবে। ভারতকে খুশি করার জন্য এগুলো করা হয়েছে, এখন ভারত খুশি।’ খান মোঃ জিল্লুর বলেন, ‘কুলাঙ্গার নাস্তিক বামপন্থিরা আজ কোথায়? তারা কি দেখছে না টিএসসি চত্বর এখন যৌনপল্লীর রুপ (রূপ) ধারণ করেছে? কোথায় তোদের মানবতা?আর যারা এইসব অনুষ্ঠান পালন করে তাদের সাথে এরকমই হওয়া উচিৎ।। আল্লাহ কোন ধার্মিক পর্দাশীল মেয়েকে অসম্মান করান না।।’ রনি বলেছেন, ‘ওখানে না গেলে কি হয় না। এর জন্য মেয়েরাই দাই (দায়ী)। একটা ওপলক্ষ (উপলক্ষ) পেলে তারা ছোট পোশাক পরে না যাওয়া পর্যন্ত সান্তি (শান্তি) পায় না। কাকে ছি ছি ছি বলবো বুঝতে পারছি না।’·
শিবিরের সমর্থক আজিজুর রাহমান বলেছেন, ‘আপোষে আধুনিকতা, আর জোর খাটালে শ্লীলতাহানি। আমাদের পরদানশীন বোনদেরকে সন্ত্রাসের গোপন বৈঠক করে বলে বহিষ্কার করলা,লাঞ্চিত করলা কিন্তু তোমরা প্রতিবাদ করনি। আমাদের বোনদেরকে বেইজ্জতি করেছ, তোমাদেরকে আল্লাহ বেইজ্জতি না করে ছেড়ে দিবে ভেবেছ?জুয়েল রানা বলেছেন, ‘তাহলে এখন বুঝ মজা কেমন লাগে। তোমরা নারীর স্বাধিনতার জন্য নারীকে ল্যাংটা করে রাস্তায় বের করে নিয়ে আসো। এখনো সময় ইসলামের ভিতরে পরিপূর্ণ ভাবে প্রবেশ করো পর্দা করা ফরয় (ফরজ) পর্দা করো। আল্লাহকে ভয় করো। চরিত্র ঠিক করো। বদমাশি (বদমায়েশী) ছেড়ে নামাজ পড় তাতে কাজে লাগবে।’
সাকলাইন বলেছেন, ‘আধা বিবস্ত্র নারী পুরা বিবস্ত্র হবে এটাই স্বাভাবিক। এক যুগ ধরে চলা দেশে পশ্চিমা সংস্কৃতিতে গড়া মাইয়াটার জিবনটা (মেয়েটার জীবনটা) নষ্ট হইলো। বাকিরা শিক্ষা নিয়েন। নাইলে দেশের ভবিষ্যত আরো অন্ধকার!’ দ্রোহীমন সৌদ -এর বক্তব্য, ‘বর্ষবরন যদি ঘর থেকে বের করে টিএসসিতে আনতে পারে, শ্লীলতাহানি তো আত্মহত্যার মতই সাধারন ব্যাপার! কারন ওটা সে স্ব-ইচ্ছায় এসেছে হওয়ার জন্য! ১৪২২ তো তারই জন্যে স্মরণীয়! ঘরে স্মরণীয় কিছু কি করা যায়?’
হোসাইন আহওমদ কামাল বলেছেন, ‘আমি রাসূল (সাঃ) এর উম্মত। আমি হাজার বার বলব আমি লক্ষ বার বলব। আমি ঘৃনা করি যারা বৈশাখের নামে অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয়। আমি ঘৃনা করি যেসব নারী বৈশাখের নামে নিজের সুন্দর্য পর পুরূষকে বিলিয়ে বেড়ায়। আমি ঘৃনা করি ঐ সব নারী পুরুষকে যারা নামাজ বাদ দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে আড্ডা দেয়। আমি আরো ঘৃনা করি যেসব নারী পুরুষ মুসলিম হয়েও অমুসলিম হিন্দুদের মত মূর্তি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।আপনি কেমন মুসলিম একবারো কি ভেবে দেখেছেন আপনি কি করছেন’

কামরুল ইসলাম কামরুল বলেছেন বেশ উপাত্তসহ। লিখেছেন - ‘হিন্দুদের সাথে একত্রিত হয়ে মুসলিম নামধারী যারা হারাম ১লা বৈশখ পালন করতে ওই সব জায়গায় যায় তারা আর যাই হোক ভালো মেয়ে নয়। কারন এইসব উতসবকে হারাম করা হয়েছে । আর ওরা এই রকম নাজেহাল হওয়াকে পরোক্ষ ভাবে পছন্দ করে। বছরের পহেলা দিবস পালন করা মজুসী বা অগ্নি উপাসকদের একটি একান্ত উৎসবের দিন। যেটা হিন্দু, বৌদ্ধ ও চাকমারা করে। এ দিবসটিকে উৎসব ও পূজার দিন হিসেবে গ্রহণ করে। তাই পহেলা বৈশাখ দুটি কারণে হারাম ও কুফরী:
১) এটি মজুসীদের অনুকরণ
২) এটি হিন্দু, বৌদ্ধ ও উপজাতিদের পূজা ও উৎসবের সাথে সদৃশ্য
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইসলাম কি কাফিরদের সাদৃশ্যপূর্ণ আমল করার অনুমতি দেয়? পবিত্র কুরআন হাদীস এ সম্পর্কে কি বলে???
১) পবিত্র কুরআন পাকে আছে-
“যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন (নিয়মনীতি, অন্য ধর্ম) তালাশ করে, তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে।” (সূরা আলে ইমরান-৮৫)
হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে, عن عمرو بن شعب عن ابيه عن جده ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ليس منا من تشبه بغيرن. । অর্থ: “হযরত আমর বিন শুয়াইব তাঁর পিতা থেকে এবং তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ঐ ব্যক্তি আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়, যে বিজাতীয়দের সাথে সাদৃশ্য রাখে।” (মিশকাত) - তাই এদের প্রতি হেদায়েতের সুপারিশ কিংবা আফসোস করাও ঠিক নয়।’

লাকির এই স্ট্যাটাস নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের সংযোগে লাকিসহ পুরো নারী সমাজকে
হেয় করে যেসব মন্তব্য ছোঁড়া হয়েছে - সেগুলো আরো ভয়াবহ।
লাকি আক্তারকে উদ্দেশ্য করে জহিরুল ইসলাম হোসাইনী নামের একজন লিখেছেন, ‘এই কথাগুলোর প্রেক্ষিতে কয়েকটি কথা বলতে চাই  ১.বিজ্ঞান মনস্ক (?) সুশীল তসলিমা নাসরিনের জরায়ুর স্বাধীনতা দাবীকে সমর্থন জানানোর পর এই ধরনের বক্তব্যের আর কোন গুরুত্ব থাকেনা | আপনি একদিকে জরায়ুর স্বাধীনতা চাইবেন অন্যদিকে কেউ এই স্বাধীনতাকে যুদ্ধ করে মুঠোয় এনে দিতে চাইলে তাকে জানোয়ার কুকুর বলে গালাগালি করবেন তা তো হয়না | ২. ছাত্র ইউনিয়নের নেতা কর্মীরা বিবস্ত্র করা মেয়েদেরকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে এসেছেন - কথাটা কেমন যেন বেসুর লাগছে। এই কাজগুলো তো জঙ্গিদের কাজ। ছাত্র ইউনয়ন করতে যাবে কেন ? হেফাজতে ইসলামের ঢাকা ঘেরাওয়ের দিন এক মহিলা সংবাদ কর্মীকে নির্যাতনের সময় এই কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররাই কিন্তু তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে পৌছে দিয়েছিলো, যার ভিডিও ফুটেজ এখনো আছে। কিন্তু আপনাদের ভাষায় তারা ভয়ংকর জঙ্গি। ৩. আপনাদের মনে আছে বিগত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের নিউজ কাভার করার জন্য ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির সাংবাদিক পিয়ার রহমান বিমানের ভেতর এক কিশোরীকে যৌন হেনস্তা করেন। অস্ট্রেলিয়া এয়ার পোর্টে নামার পর ওখানকার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তিনি বলেছিলেন যে ঘুমের মধ্যে ওই কিশোরীর গায়ে তার হাত উঠে যায়। তিনি বুঝতে পারেননি। আমরা জানি ঘুমের মধ্যে হাত নিচের দিকে থাকে। এই প্রথম এই সুশীল জানোয়ারের মাধ্যমে জানলাম ঘুমালে হাত উপরের দিকে উঠে। অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ কিন্তু আমাদের মত চেতনায় উজ্জীবিত নয়। তাকে গ্রেফতার করে। ৪. বাংলাদেশের পুলিশ ভাইদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। মেলায় যারা যান তারা তো জেনে শুনেই যান। মেলা মানেই ঠেলা। ঠেলাঠেলি ঘেষাঘেষি হবেই। এক্ষেত্রে শ্রদ্ধেয় (?) জয়নাল হাজারীর লেখা 'বাঁধনের বিচার চাই' বইটি সবাইকে পড়ে দেখার জন্য অনুরোধ করছি। ৫. বৈশাখী আপুদের বলছি আপনারা তো প্রতি বছরই ছেলেরা এমন ছেলেরা তেমন এইগুলো বলে মিডিয়ায় ঝড় তুলেন। ফেসবুক ভাসিয়া (ভাসিয়ে) দেন। একবারও কি ভেবে দেখেছেন এজন্য দায়ী কারা? কুকুরদের জন্য নিজেকে মেলে ধরবেন আর ওরা ঝাপিয়ে পড়বেনা তাকি হয় ? আসুন সবশেষে গতকালের একটি সংলাপ দেখি যা এইমাত্র ফেসবুকে পেলাম: '-এই ছেলে তোমার ঘরে কি মা বোন নেই ? গায়ে হাত দাও কেন? -জি আপু মা বোন্ আছে, তবে বউ নেই। তাই ভিড়ের মাঝে বউ খুঁজতাছি। -কি? এত বড় কথা! এটা কি বউ খুঁজার জায়গা? -জি আপু. আপনারা যখন বাসা থুয়ে বউ সেজে পাবলিকের ভিড়ে ডুকেছেন (ঢুকেছেন) তখন আমরাও এখানে বউ খুঁজছি? ওদেরকে জানোয়ার বলে লাভ কি? আপনারা কি খুব ভালো?’
কেয়া চৌধুরী নামের এক মেয়ে বলেছেন, ‘উলংগ হয়ে ছেলেদের সামনে চলবে তাহলে ছেলেরা কি তুমাদের চুমু খাবে ছেলেদের চেতনা জাগিয়ে নিরবে কোথায় যাবে যা হয়েছে তুমাদের নত নষ্ট রমনীদের জন্য উপযুক্ত হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
লাকির উদ্দেশ্যে ছোঁড়া মন্তব্যের একাংশ ...
তাজাম্মুল ইসলাম আবার এই ফাঁকে তার দলের প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এই না হলে ইসলামী ছাত্রশিবির.. আজ বাংলা নববর্ষ। এই দিনকে পুঁজি করে যেখানে অধিকাংশ ছাত্রসমাজ বেহায়াপনায় লিপ্ত, গান,ফুর্তিতে মেতে উঠে নিজের চরিত্উঠে নিজের চরিত্রের ১২টা বাজাচ্ছে, সেখানে ছাত্রশিবির তার কর্মীদের চরিত্র সংরক্ষণে গ্রহন করেছে এক অভিনব প্রক্রিয়া। শিবিরের প্রতিটি উপশাখা থেকে শুরু করে থানা,মহানগরী পর্যন্ত সবখানেই আয়োজন করা হয়েছে কোন না কোন প্রোগ্রাম। যেমন সামষ্টিক পাঠ,হাদীস পাঠ,সাথী শিক্ষাশিবির সহ অন্যান্য মৌলিক প্রোগ্রামাদী। আলহামদুলিল্লাহ, যার ফলে আমাদের কোনভাবেই বেহায়াপনায় লিপ্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। অভিনন্দন ছাত্রশিবির তোমাকে। তুমি বেচে থাকো যুগ যুগ ধরে। আর তোমার হাত ধরে গড়ে উঠুক একটি চরিত্রবান,আদর্শ সমাজ।’ এমকে জামান লিখেছেন, ‘তোমাদের মত লাকিদের কারনেই সমাজে এত বেহায়াপনা। অভিযোগ কর কেন তোমরা তো এটাই চাও যে তোমরা রাস্তায় উলঙ্গ হয়ে চলবে অার ছেলেরা সুযোগ মত চেপে ধরবে। অার জামায়াত শিবির এটা চায়না বলেই তারা অাজ জঙ্গি।’
আবুল কালাম লিখেছেন, ‘খানকি মাগির আবার যৌন লজ্জা।’  মোঃ মুরাদ লিখেছেন, ‘মেয়েগুলাকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। এটা ওই বদমাইশ মহিলাদের প্রাপ্ত ছিল। য়ারা (যারা) এই কাজ করেছে তাদের কে জানাই ধন্যবাদ কারন ওই ছেলে গুলা ছিল সত্যিকারের পুরুষ । শিয়াল সামনে মুরগি শরীল (শরীর) দেখায় ঘুরাঘুরি করবে শিয়াল শিকার করবে না তা হয় না।’ জুয়েল রানা লিখেছেন, ‘গন জাগরন মঞ্চ নামে তোরা যে যৌনতার মঞ্চ করে যে নোংরামি করেছিস এবং ছড়িয়ে দিয়েছিস এটা তারই প্রতিফলন ৷ এর জন্য তোরাই দায়ী৷’ হামিদ এইচ আজাদ লিখেছেন, ‘একে যদি বাংলার সংস্কৃতি বলে, লাথি মারি এই অপ-সংস্কৃতিকে।’
রবিউল আওয়াল লিখেছেন, ‘উলংগ (উলঙ্গ) হয়ে ছেলেদের সামনে চলবে তাহলে ছেলেরা কি তুমাদের (তোমাদের) চুমু খাবে ছেলেদের চেতনা জাগিয়ে নিরবে কোথায় যাবে যা হয়েছে তুমাদের (তোমাদের) নত (মতো) নষ্ট রমনীদের জন্য উপযুক্ত হয়েছে বলে আমি মনে করি।কর্ণেল শাকুর মজিদ দাবি করেছেন, ‘এই সব বেহায়াপনার বিরুদ্ধে এন্টিভাইরাস!! কুত্তায় কামড়ালে নাকি যে রাবিস পুশ করা হয়, তা নাকি জলাতঙ্কের জীবাণু দিয়ে তৈরি!! এই সব বেহায়া নারীদের বিবস্ত্র ও ধর্ষণ করে এন্টি ভাইরাস দেওয়া উচিত যাতে কেউ আর এসব উলংগপনা (উলঙ্গপনা) করার সাহষ (সাহস) না পায়!! ধন্যবাদ ছাত্রলীগ ভাইদের!!’ যুবায়ের আহমেদ পিকুল বলছেন, ‘ছেলেগুলোর যৌন জাগরন হয়েছে, আর কি করা। ভাদ্র মাসের কুত্তা কুত্তির কামলীলা। শুধু কুত্তার টাই দেখলেন, কুত্তি যে পাছা উদোম করে রাখে সেটার নামই কি নারী স্বাধীনতা?’
মোহাম্মদ রওশন আহমদ লিখেছেন,  ‘হা হা হা আজ খুব আনন্দ লাগতাছে মামুরা আপনারা ও প্রান খুলে হাসুন হা হা হা। গত কালকের পতিতা বরণ অনুষ্ঠানের দিনে বহু পতিতার গলায় ইলিশের kata (কাঁটা) নাকি লেগেছে। অনেক পতিতাকে জুর পূর্বক (জোড়পূর্বক) ধর্ষণ করা হয়েছে হুল আলা হুল আলা... অনেকে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে, অনেকে নিরবে চোখের পানি ফেলছে। কি যে আনন্দ না লাগছে! উক্ত দিনের উপহার পেয়ে হুল আলা হুল আলা...’
এ এম জুবায়ের বাবু লিখেছেন, ‘ঠিকই আছে,আরো বেশি করে করার দরকার ছিলো। বেহায়াপনার এক্তা সীমা আছে। যারা বাঁধন এর কথা ভুলে গিয়ে নতুন সাঝে (সাজে) উদ্যমী হতে চায় তারাই এর শিকার হইছে। যাদের গত আওয়ামী লীগ (১৯৯৬-২০০০) আমল এর কথা মনে নাই তাদের আর বেশি করে করা উচিত। Go ahead (এগিয়ে যাও) বাংলার সোনার ছেলেরা। সালা বাইনচোদ এর বাচ্চারা।’

সাহিদুল ইসলাম বাঁধন লিখেছেন, ‘একটি বৈশাখি মেলায় পঞ্চাশটিই আল্লাহর গজব টেনে আনবে। আপনি কি বাবা নাকি দালাল? কিভাবে পাঠালেন আপনার মেয়েকে, আপনার বুনকে (বোনকে), আপনার বৌকে হাজার লুকের (লোকের) বিডের (ভীরের) ভিতর, যেখানে পুরুষ লুক (লোক) হাঁটতে কষ্ট হয়ে যায়। আপনি তো উদ্দেশ্য করে পাঠিয়েছেন। তাহলে আপনার উদ্দেশ্য কি ইসলাম ধ্বংস করা। নাকি মুসলিম ছেলেরা জিনার (বহুগামিতার) পথে যাওয়া আপনার মতো পুরুষ খ্রিষ্টানের দালাল।’

সত্যবালক নামের একটি আইডি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘ভাল ঘোড়ার এক চাবুক। এই বোনদের যদি কিঞ্চিত জ্ঞান থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই চেতনার বেশ্যামী ভুলে দ্বীনের পথে ফিরে আসবে । জ্ঞানীদের একটি কথা আছে ,আকেলমান্দ কে লিয়ে ইশারা কাফি হায়। অর্থাৎ জ্ঞানীদের জন্য ইঙ্গিতি যথেষ্ট। এরপরেও যদি বুঝ না আসে ,তাহলে যেমন কর্ম তেমন ফল পাবে । যেমন পেয়েছে।’

সোহাগ খান লিখেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে আমি সম্মান করি,কিন্তু সে পবিত্র বিদ্যাপীঠ কে অসম্মান করচে কিচু (করছে কিছু) বেজন্মার জাত, যারা আল্লামা শফি সাহেবের মত লোকদের অপমান করে, আল্লামা সাইদি সাহেবের মত লোকের পাশী (ফাঁসি) দাবি করেকুত্তার বাচ্চারা মা বোন্দের ইজ্জতে হামলা করে, তাদের কাচে উদের (কাছে ওদের) মা বোন ও নিরাপদ নয়।’

এড়িয়ে যাবেন না। পড়ুন ...
সংবাদ ভাষ্য
সেদিনের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিক সংবাদগুলোয় বলা হয়েছে, বাংলা নববর্ষের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন কয়েকজন নারী। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে এ ঘটনা ঘটে। নিপীড়নকারীদের ঠেকাতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি লিটন নন্দীর হাত ভেঙেছে। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে এই ঘটনা জানানো হলেও তাঁরা যথাসময়ে ব্যবস্থা নেননি। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন ও প্রগতিশীল ছাত্রজোট। তারা অভিযোগ করেছে, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণেই যেকোনো উৎসবের দিন এ ধরনের ঘটনা ঘটে। তারা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা দেখে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

সক্রিয় বাঁশের কেল্লাও
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লিটন নন্দী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বাংলা নতুন বছর উপলক্ষে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানুষের প্রচণ্ড ভিড় ছিল। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শাহবাগ থেকে টিএসসি আসার পথে তাঁরা কয়েকজন দেখেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে ৩০-৩৫ জনের একদল যুবক বেশ কয়েকজন নারীকে যৌন হয়রানি করছে। তারা কারও কারও শাড়ি ধরে টান দিচ্ছিল। কয়েকজনকে তারা বিবস্ত্রও করে ফেলে। এ সময় সেখানে বাধা দিতে গেলে ওই যুবকদের ধাক্কায় তিনি পড়ে যান এবং তাঁর হাত ভেঙে যায়।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে লিটন নন্দী বলেন, ‘এ দৃশ্য বর্ণনা করা যায় না। আমি আমার পাঞ্জাবি খুলে এক নারীকে দিয়েছিলাম। আরেকটি মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। ওই যুবকেরা ভিড়ের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধরে এই ঘটনা ঘটাচ্ছিল। আমরা পুলিশ ও প্রক্টরকে ঘটনা জানালেও তারা কেউ যথাসময়ে আসেনি। ছাত্র ইউনিয়নের ছেলেরা পরে প্রক্টরের কার্যালয়ে গিয়ে দেখেন, তিনি কম্পিউটারে গেমস খেলছেন।’ ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী গেটে যখন এই ঘটনা ঘটছিল, তখন সেখানে মাত্র দুজন পুলিশ ছিল। টিএসসির ডাচ-বাংলা বুথের দিকে বেশ কয়েকজন পুলিশ ছিল। আমরা তাদের এগিয়ে আসতে বললে তারা তখন রাজি হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে আমরা দুজনকে ধরিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ পরে তাদের ছেড়ে দিয়েছে বলে জানতে পারি।’
গণমাধ্যমগুলো আরো বলছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিজ্ঞান লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় যেখানে খুন হন, তার পাশেই সোহরাওয়ার্দী গেটে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র অভিযোগ করেছেন, সোহরাওয়ার্দী গেট এবং এর ভেতরে প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এছাড়া সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায়ও প্রথম বর্ষের কিছু ছাত্র নিয়মিতই নারীদের লাঞ্ছিত করে। এসব ব্যাপারে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরও এসব প্রতিরোধে এগিয়ে আসা উচিত। ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা বলেন, ঘটনাস্থলে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ছিল বলে পুলিশ দাবি করেছে। কাজেই সেগুলো দেখে যেন দ্রুত দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বাঁশের কেল্লার আরেকটি পোস্ট
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন, ‘ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা আমাকে খবর দেওয়ার পরপরই আমি পুলিশকে সোহরাওয়ার্দী গেট বন্ধ করতে এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে বলে আমি জেনেছি। আমরা পুলিশকে বলেছি সিসি টিভির ফুটেজ দেখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে।’

আরেকটি সংবাদে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতি ছিল। আক্রান্ত নারীদের রক্ষার জন্য তাদের কাছে মিনতি জানালে প্রথমে তারা এগিয়ে এসে মৃদু লাঠিচার্জ করে। কিন্তু বস্ত্রহরণকারীদের ছাত্রলীগ পরিচয় জেনে নিস্ক্রিয় হয়ে যায় পুলিশ। ওই সময় এক নারীকে রক্ষা করতে গিয়ে এগিয়ে যান ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা নেতা লিটন নন্দী নিজের গায়ের পাঞ্জাবি খুলে এক বিবস্ত্র নারীর ইজ্জত হেফাজত করতে গিয়ে মারধরের শিকার হন। এই ঘটনার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের সরকার সমর্থিত ছাত্রলীগের বখাটে কর্মীরা জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে ছাত্র ইউনিয়ন জড়িতদের রাজনৈতিক পরিচয় আড়াল করে তাদের বহিরাগত আখ্যা দিয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য
টিএসসি’র ঘটনার পর শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ লাঠিচার্জ করেও যুবকদের নিবৃত্ত করতে পারেনি। এ ঘটনার জড়িতদের ভিডিও ফুটেজ দেখে সনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) বিভাগের জাহাঙ্গীর আলম সরকারও বলেছেন, ‘পুলিশ এ ব্যাপারে বিধিমতো ব্যবস্থা নেবে।’ এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের এডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছে।’
মনে রাখবেন
সামরিক সরকারদের আনা সংশোধনীগুলো বাতিল করে পূর্ণাঙ্গ অসাম্প্রদায়িক নীতির সেই ৭২’র সংবিধানে ফেরার সুযোগ তৈরী করে দিয়েছিলো আমাদের উচ্চ আদালত। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সেই সংবিধান পুণর্বহাল না করে - তাদের ইসলামী ভোট ব্যাংক বাড়াতে চেয়েছে। আরেকটি (পঞ্চদশ) সংশোধনী এনে স্বৈরশাসকদের ইসলামী সিদ্ধান্তগুলোকেই দিয়েছে ‘গণতান্ত্রিক’ স্বীকৃতি। সংবিধানের শুরুতে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, মানে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম’ - কথাটি রেখে দিয়েছে। রেখেছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকেও। আর নারীদের তেঁতুল আখ্যা দেয়া আল্লামা শফী হুজুরকে দিয়েছে ৩২ কোটি টাকা মূল্যের জমি। আর এটাও নিশ্চয়ই মনে রাখুন, বর্তমানে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা এবং স্পিকার, তিন জনই নারী।

বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণীকে বিবস্ত্র ও নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

বুধবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের এডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহিম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছে।

 প্রসঙ্গত, বাংলা নববর্ষ উদযাপণ করে বাসায় ফেরার সময় ঢাবি ক্যাম্পাসে এক তরুণীকে বিবস্ত্রসহ একাধিক নারীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। - See more at: http://www.sheershanewsbd.com/2015/04/16/76990#sthash.8S49RSXi.dpuf
বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণীকে বিবস্ত্র ও নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

বুধবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের এডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহিম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছে।

 প্রসঙ্গত, বাংলা নববর্ষ উদযাপণ করে বাসায় ফেরার সময় ঢাবি ক্যাম্পাসে এক তরুণীকে বিবস্ত্রসহ একাধিক নারীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। - See more at: http://www.sheershanewsbd.com/2015/04/16/76990#sthash.8S49RSXi.dpuf
বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণীকে বিবস্ত্র ও নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

বুধবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের এডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহিম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছে।

 প্রসঙ্গত, বাংলা নববর্ষ উদযাপণ করে বাসায় ফেরার সময় ঢাবি ক্যাম্পাসে এক তরুণীকে বিবস্ত্রসহ একাধিক নারীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। - See more at: http://www.sheershanewsbd.com/2015/04/16/76990#sthash.8S49RSXi.dpuf
বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তরুণীকে বিবস্ত্র ও নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

বুধবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের এডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহিম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি করেছে।

 প্রসঙ্গত, বাংলা নববর্ষ উদযাপণ করে বাসায় ফেরার সময় ঢাবি ক্যাম্পাসে এক তরুণীকে বিবস্ত্রসহ একাধিক নারীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। - See more at: http://www.sheershanewsbd.com/2015/04/16/76990#sthash.8S49RSXi.dpuf
তবুও সুন্দর আগামীর স্বপ্ন জিইয়ে বাঁচে বাঙালের প্রতিবাদ, জাগো বঙ্গ।
newsreel [সংবাদচিত্র]