খালি পুলিশ আর পুলিশ’
- অমর একুশে বইমেলায় অবস্থানরত এক কবিবন্ধু মাত্রই বললেন, মুঠোফোনালাপে। তল্লাশীর অতিরিক্ততায় বিরক্ত অনেকে মেলায় না ঢুকেই চলে যাচ্ছেন বলেও তিনি দাবি করলেন। আরেক অনুজ সাংবাদিকের অভিমত, ‘লেখক হত্যা আর প্রকাশক গ্রেফতারের বইমেলা আজ দৃশ্যতই নিরাপত্তার খোলসে বন্দী।’
মূহুর্তে মনে পরে যায় গত সন্ধ্যায় পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের মুখে শোনা কথাগুলো। তিনি অত্যন্ত বিনয় নিয়ে আমাদের বলেছিলেন, ‘আপনারা চলে যান। একটু পরই পুরো এলাকা পুলিশে পুলিশারণ্য হয়ে যাবে। আজ এখানে পুলিশ ছাড়া কেউ থাকবে না।’ অথচ বছরের পর বছর ধরে প্রতিটি ২০ ফেব্রুয়ারির বা মহান একুশের রাত আমরা - সমমনা বন্ধুরা টিএসসি এবঙ আশেপাশের এলাকায় কাটিয়েছি। গান, আড্ডা, শ্লোগান আর মানুষের দৃপ্ত মুখর থেকেছে পুরো এলাকা। এমনকী সেটা পাকিস্তানি ভাবাদর্শের ডানমনা (বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন) সরকার ক্ষমতায় থাকাকালেও। এরপর সকালে শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে, সারাদিন মেলায় কাটিয়ে রাতে বাসায় ফিরেছি। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি - সে সাধ একদমই মিইয়ে দিলো।
পুলিশের সাথে তর্ক করতে ইচ্ছে হলো না। কারণ জানি সে রাষ্ট্রীয় নির্দেশের দাস মাত্র। অর্থাৎ এখন রাষ্ট্রই চাচ্ছে না একুশের রাতটা আমরা এভাবে উদযাপন করি। জানি না রাষ্ট্রের পরিচালকরা ভুলে গিয়েছেন কী’না, একুশ কেবলই আনুষ্ঠানিকতার বিষয় না। এর সঙ্গেই আছে জড়িয়ে আছে এ জাতির, মানে বাঙালের জাতীয়তা বোধের চেতনা।
![]() |
বাসায় ফিরতে ফিরতে খুব মনে পরছিলো - শৈশবে কাদামাটি বা ইট, কাঠ দিয়ে গড়া শহীদ মিনার, আলপনা আঁকা, ফুল চুরি, খালি পায়ে ছুটোছুটি - আরো কত কী। শুধু বার বার ভুলতে চেয়েছি, এখন এ দেশ চালাচ্ছে স্বাধীনতা যুদ্ধে ‘অফিসিয়ালি’ নেতৃত্বদানকারী দলটিই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই দল আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন ভাবাদর্শের ‘পারপাস সার্ভ’ করছে তা সত্যি, একদমই ভাবতে চাইনি। কারণ আজকাল ভাবতেও ভয় লাগে।



![newsreel [সংবাদচিত্র]](https://live.staticflickr.com/4908/46061368235_81e61ab7b9_m.jpg)