Powered By Blogger
interview লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
interview লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

১৫ এপ্রিল ২০১৫

ঘুমঘোরে কথোপকথন

২০১৩’র ফেব্রুয়ারিতে শাহরিয়ার শাওনের তোলা ছবি
ঘুমঘোর~কবিতার কাফে মূলত একটি ফেসবুক গ্রুপ, যাদের চর্চা কবি ও কবিতা নিয়ে । বিগত একুশে বইমেলা চলাকালে এই গ্রুপের এক বিশেষ আয়োজনের অংশ হিসেবে নিজের প্রথম কাব্যগ্রন্থ নিয়ে আলাপ হয়েছিলো কবি শাহ মাইদুল ইসলাম -এর সাথে।  তিনি গ্রুপটির এডমিনদের একজন। অন্যান্য এডমিনরা হলেন সৌরভ পথবাসী, শাফিনূর শাফিন ও ইয়াসীন ফিদা হোসেন।  তাদের সেই আয়োজন এই ব্লগের পাঠকদের জন্য পুনঃপ্রকাশ করা হলো।
কবি ঈয়ন এবং তাঁর 'ভাবনাংশ' নিয়ে ঘুমঘোরের আজকের আয়োজন। 'ভাবনাংশ' প্রকাশিত হয়েছে 'কাদাথোঁচা' থেকে আর প্রচ্ছদ নামাঙ্কনে সাইদ র’মান। লিটলম্যাগ চত্বরের প্রান্তস্বর -এর স্টলে রয়েছে বইটি। চার ফর্মার এ গ্রন্থের দাম রাখা হয়েছে একশ ত্রিশ টাকা। বইমেলায় ২৫ শতাংশ ছাড়ে পাওয়া যাবে মাত্র একশ টাকায়। কবি ঈয়নের সাক্ষাৎকার এবং তাঁর 'ভাবনাংশ' থেকে কিছু কবিতা পড়ার আমন্ত্রণ।
ঘুমঘোর~কবিতার কাফে : আমাদের আলোচনা শুরু হোক আপনার প্রকাশিতব্য বইটির শিরোনাম দিয়ে। কেনো এই কবিতাগ্রন্থের নাম নিলেন 'ভাবনাংশ'?
ঈয়ন : ১১.১১.১১ - শিরোনামে একটি পাণ্ডুলিপি সাজিয়েছিলাম ২০১০’র জুলাইয়ে। ২০১১ সালের ১১ নভেম্বরে ওই নামেই প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু তা আর হয়নি। নিজস্ব সময়ের অভাবে পাণ্ডুলিপি সম্পাদনাতেই কেটে গেছে পাঁচটি বছর। সম্পাদনা করতে গিয়েই ২০১২ সালে ‘ভাবনাংশ’ –নামটি মাথায় আসে। এটি মূলত নিজেরই আরেকটি সিরিজের শিরোনাম দ্বারা প্র্রভাবিত। সাত-আট বছর আগে ‘দ্বান্দিক ভাবনা বিষয়ক আজাইরা প্যাঁচাল’ নামে ওই সিরিজটি লেখা শুরু করেছিলাম। এই গ্রন্থে অবশ্য ওই সিরিজের কোনো কবিতা নেই।

ঘুমঘোর~কবিতার কাফে : এই বইয়ের কবিতাগুলো মূল কী কী বিষয়কে কেন্দ্র করে সাজিয়েছেন। যেমন জীবনানন্দের কবিতায় ফিরে ফিরে মৃত্যুচেতনা আসে, ওয়ার্ডসোয়ার্থের কবিতায় আসে স্মৃতি ও প্রকৃতি। আপনি কোন কোন বিষয়ের কাছে ফিরে যান?
ঈয়ন : পুরাই ককটেল। মানুষ, সময়, সম্পর্ক, প্রকৃতি, রাজনীতি থেকে শুরু করে সেক্স, ভায়োলেন্স- এমনকি আইটেম সঙও আছে এ গ্রন্থে। তবে হ্যাঁ, বার বার ফিরে এসেছি নিজের, তথা মানুষেরই কাছে।

ঘুমঘোর~কবিতার কাফে : একটা নতুন কবিতার সন্ধান আপনি কীভাবে করেন? ছন্দ, প্রসোডিক্যাল এলেমেন্ট, ফর্ম ইত্যাদি ছাড়া আর কোনো অনুষঙ্গকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন কি? কখন মনে হয় একটি কবিতার সৃষ্টি পূরণ হয়েছে, এতে আর হাত দেবার নেই?
ঈয়ন : নতুন কবিতা সন্ধান করি না আর। এক সময় করতাম হয়ত। দিনভর কবিতা লেখার বাতিক ছিলো যখন। তখন ছন্দ, ফর্মসহ তাবৎ অনুষঙ্গকেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে হত। কিন্তু এখন আরোপিত কিছুই আর ভালো লাগে না। তাই কবিতা লেখার জন্য কোনো কিছুকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণও মনে হয় না। শুধু ভালোবাসি শব্দ, ছন্দের ঘোর মগ্নতা। তাতেই ডুবে থাকি। দৈনন্দিন ভাবনার পরম্পরাই এখন কবিতা হয়ে ওঠে। কখনো তা লেখা হয়, কখনো হয় না। তবে যেগুলো লেখা হয়, সেগুলো প্রকাশিত হওয়ার আগ মুহুর্ত অবধি সম্পাদনা করি। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে কবিতাগুলো তামাম পূর্ণতা নিয়েই হাজির হয়। তবুও তা পাঠকের উদ্দেশ্যে প্রকাশের আগে সম্পাদনার টেবিলে ফালানো উচিত বলেই আমি মনে করি।

গ্রুপ পোস্টের স্ক্রীনসট

ঘুমঘোর~কবিতার কাফে :
একজন কবির কখন তাঁর কবিতা গ্রন্থাকারে প্রকাশে উদযোগী হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন? অন্যভাবে বললে কবিতাগ্রন্থ প্রকাশে কেমন সময় নেয়া দরকার এবং কেন?
ঈয়ন : কবি ভেদে কবিতা লেখার উদ্দেশ্যই আলাদা। তাই আলাদা প্রকাশের তাড়নাও। আসলে কোন পাণ্ডুলিপি কখন প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে লেখা হচ্ছে তা কবি নিজেই ভালো জানেন। তবে প্রত্যেক কবির এটুকু অন্তত মনে রাখা উচিত – প্রকাশিতব্য গ্রন্থটি তার কাব্যচিন্তা, দর্শন ও প্রবণতার দলিল। তাই ওই যে বললাম, কবিতাগুলো পাঠকের উদ্দেশ্যে প্রকাশের আগে অবশ্যই সম্পাদনার টেবিলে বসুন। নিজের প্রতিটি কবিতা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ুন। বিভিন্ন বয়স, শ্রেণী ও সময়ের পাঠকের দৃষ্টিভঙ্গী নিয়েও কয়েকবার পড়া যেতে পারে। অর্থাৎ নিজের লেখার প্রথম বিচার নিজেই করুন। এরপর তা পাঠকের কাছে পাঠান।

ঘুমঘোর~কবিতার কাফে : কবিতা কতটুকু কবির, কতটা পাঠকের? কোনো কোনো কবি বলে থাকেন লিখে ফেলার পর তাঁরা কবিতাটির দিকে ফিরেও তাকান না আর! এভাবে কি পাঠকের জন্য ছুঁড়ে ফেলা হয়?
ঈয়ন : পাঠকের উদ্দেশ্যে প্রকাশের আগ মুহুর্ত অবধি প্রতিটি কবিতা একান্তই কবির। কিন্তু প্রকাশের পর তা পাঠকের। আমার অমুক, আমার তমুক – জাতীয় যে আমিত্ব নিয়ে মানুষ ঘুরে বেড়ায়, তাকে হত্যা করে তামাম নিজস্বতাকে সার্বজনীন করার চেষ্টাই করে যায় কবিরা। আর সেই চেষ্টায় জন্ম নেয় কবিতা। যা কখনো ছুঁড়ে ফেলা যায় না। কারণ প্রকৃত পাঠক প্রত্যেক কবির সবচে আপন। তারা হতে পারে আশেপাশের বা দূরের, এখনকার বা আগামীর।

ঘুমঘোর~কবিতার কাফে : আপনার কবিতায় কারো কবিতার কিংবা কোন কবির বা তত্ত্বের প্রভাব আছে বলে কি আপনি মনে করেন?
ঈয়ন : আশৈশব ‘মানুষ ও গ্রন্থ – দুটোই যে পাঠ্য’ ছিলো। তাই চিন্তায় ও প্রকাশে বিভিন্ন মানুষ ও গ্রন্থের প্রভাব অনিবারয। বাংলাদেশের সংবিধান থেকে আল-কোরআন, ডারউইন থেকে ভগবান- সবই প্রভাবিত করেছে আমায়। অতএব কাব্যচর্চার ক্ষেত্রেও আমার যে ভাষাভঙ্গী দাঁড়িয়েছে তা নিশ্চয়ই প্রভাবমুক্ত নয়। তবে কারো মতো করে কবিতা লেখার চেষ্টাও করি নাই কখনো। আবার খুব সচেতনভাবে নিজস্বতা আরোপেরও চেষ্টা করা হয় নাই। বাকিটা পাঠক, তাত্ত্বিকরাই ভালো বুঝবেন – বলতে পারবেন।

শাহ মাইদুল ইসলাম
ঘুমঘোর~কবিতার কাফে : ছোট ছোট পংক্তি ও ছন্দিত তাল লয়ে লিখিত আপনার কবিতাগুলো বর্তমান স্রোতে থেকে অনেকটা ভিন্ন মাধুর্যময় এক আঙ্গিকের চর্চা। আঙ্গিকের এই নিজস্বতা নিয়ে আমাদের কিছু বলুন।
ঈয়ন : আগেই বলেছি, কবিতায় খুব সচেতনভাবে নিজস্বতা আরোপের চেষ্টা নেই আমার। তবে হ্যাঁ, এখন লেখার ক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্ততাকে গুরুত্ব দেই আমি, স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজি। হয়ত এ কারণেই ইদানীংকার লেখায় সহজিয়া ভাষা, ছন্দের ব্যবহার বেড়েছে; কমেছে উপমা ও রূপকের ব্যবহার। আসলে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলতে ভালো লাগে না আর। এখন চেষ্টা করছি সহজে বলার। যাতে একজন নিরক্ষর মানুষও কোনো লেখা শুনলে বুঝতে পারেন, কি বলতে চেয়েছি। আসলে কবিতাকে সাধারণের কাছে ফেরানোর তাগিদ অনুভব করছি খুব। এই মাটি ও মানুষের সাথে কবিতার সম্পর্ক কিন্তু আজকের নয়, বহু পুরানো। এক সময় ছন্দে ছন্দে কথা বলা ছিলো বাঙালের স্বাভাবিক প্রবণতা। পরবর্তীতে ঔপনিবেশিক শিক্ষা বা পাশ্চত্যের প্রভাব – বাংলার সাহিত্যকে একদিকে সমৃদ্ধ করেছে, অন্যদিকে করেছে বিভেদাক্রান্ত। অশিক্ষিত কবিয়ালদের সহজবোধ্য দেশজ ঢঙ বা ছন্দের চেয়ে শিক্ষিত মহাকবিদের গণবিচ্ছিন্ন দুর্বোধ্য উপমার সামাজিক কদর বাড়িয়েছে পশ্চিমা চেতনা। কিন্তু আমার মনে হয়, এই ‘কলোনিয়াল ট্রমা’ কাটিয়ে ওঠার সময় এসে গেছে। ফের মাটি ও মানুষের কাছেই ফিরতে হবে কবি ও কবিতাকে।

ঘুমঘোর~কবিতার কাফে : “...আজন্ম; এক বেজন্মা বোধ / তাড়া করে ফিরছে / বিতৃষ্ণা মিলছে / ক্রমাগত বাড়ছে, জন্মানোর ক্রোধ।” - এই যে জন্মানোর ক্রোধ বাড়ছে, এর থেকে কী পরিত্রাণ হয়, না হয় যদি, তাহলে কী চাইছি আমরা?
ঈয়ন : আমরা হয়ত পরিত্রাণের সেই উপায়ই হাঁতড়ে বেড়াই। কেউ খুঁজে পাই, কেউ পাই না।

'ভাবনাংশ' থেকে কিছু কবিতা

জ্বলে মা ─ পুড়ি আমরা
ক্ষমতার মমতায়
পাশবিক প্রতিবাদ
সন্ত্রাসের সমতায়
দগ্ধতার আর্তনাদ
কার কি’বা আসে যায়
কারা তারা কোন দায়
চাপানোর ব্যস্ততায়
জ্বালায় সে দাবানল
জ্বলে মায়ের আঁচল
তব নিরীহ বাঙাল
যে স্বভাব ভীরুতায়
লাশ নিয়ে রাজনীতি
নীরবেই সয়ে যায়

সে ভয় আসল খুনী
গনহত্যায় যে গুণী
হয় নির্বিঘ্নে বর্বাদ
_________

বে-ঈমান

এক এবং
অদ্বিতীয়
আপনার
কীর্তি ম্লান
করে যায়
এমন কে
এ ধরার
কোন মর্মে
লুকায়িত
রয়েছে যে
অস্বীকার
করবেইে
এ অস্তিত্ব...

কারই বা
ঈমানে যে
আজ নেই
সে সম্মান;
যা সবাই
আপনাকে
দিয়ে যাচ্ছে
যুগ থেকে
যুগান্তর
ধর্ম থেকে
ধর্মান্তরে

কে’বা করে
অস্বীকার
আপনার
অবদান

অসুর বা
লুসিফর
যে রূপেই
ফরমান
লাভ ইউ,
হে মহান
শয়তান।
_________

ইন্দ্র কাকুর মন্দা বচন
─ কবি মন্দাক্রান্তা সেন’কে

ওগো ও মামণি
সামলিয়ে রাখো
ও অঘ্রাত যোনি
কাতর নয়নে
চেয়ো না এ ক্ষণে
ভিজে যাবে সব
তোমারো অজ্ঞাতে
ঘুমাও বালিকা
স্তনের লতিকা
জাগায়ো না আর
সহজ সরলে
যদি যায় বলা
কেন শুধু তবে
করো ছলাকলা
কামাতুর কালে
অধর ও ধরে
কত কী যে চলে
কে’বা কয় কারে

যেদিন সজোড়ে
সিঁড়ির আড়ালে
ধরেছো জড়ায়ে
বুঝিনি প্রথমে
দিগ্বিদিক কে সে
ঝড়োশ্বাস তোলা
সাবধানী চুমো
নিয়েছো আঁধারে
চেটেপুটে লুটে
আলোতে অবাক
হয়েও নির্বাক

থাকতে হয়েছে
পারিনি বলতে
তোমার মা’ও যে
ওই সিঁড়ি ঘরে
বহু দিনে-রাতে
একই বিছের
কামড় খেয়েছে

বোঝো এই হাল
কি করি যে বাল
হয় নাই কাটা
হায় কত কাল
আর জ্বলে নাই
অপরাধ বোধ
কারণ তোমার
এ কাকু আসলে
পুরাই বাঞ্চোত

ধুরও বালিকা
ঘুমাও ঝটিকা
ভুলে যাও দ্রুত
অসম প্রেমের
সুখের সমতা
_________

নাগা

মগ্নতার কোন স্তরে পৌঁছে গেলে
অতটা নিশ্চিন্তে ছোটা যায়, তা’ই
বুঝতে কবেই যেন নাগা সন্ন্যাসীর
বেশে রাজ নগরের রাজপথ থেকে
শুরু হয় বর্ণিল নির্বাক তীর্থযাত্রা
_________

ধসে বশ

সময় ও শরীরের বন্দীত্বের ক্ষতে
বাড়ে ফরমায়েশি আর হিংসুটে যশ
রতিক্লান্ত অবসন্ন শিশ্নেরও মতো
তৃপ্ত লালসায় জমে বোধেরই ধস
তবু ভাবনার ঋণে সুখের দুর্বৃত্ত
সস্তা তারিফের বাণিজ্যে রয়েছে বশ
_________

বেজন্মা বোধ বা জন্মানোর ক্রোধ

ক্ষীণ মৌনতার স্থবিরতায় অস্থির
জৈবিকতার অদৃষ্ট অতৃপ্তি আর
প্রজাপতির অপেক্ষায় গোলাপেরা
মেঘগন্ধা অবসাদে স্থবির।

আজন্ম; এক বেজন্মা বোধ
তাড়া করে ফিরছে
বিতৃষ্ণা মিলছে
ক্রমাগত বাড়ছে, জন্মানোর ক্রোধ।

সুপ্রীম কোর্টের খোদারাও
দল বেঁধে বিব্রত হয় দেখে
বেকারত্বের ফ্রেমে বন্দী প্রেমে
সব কটাক্ষ মেনে নেই আমরাও।

তবু...

আজন্ম; এক বেজন্মা বোধ
তাড়া করে ফিরছে
বিতৃষ্ণা মিলছে
ক্রমাগত বাড়ছে, জন্মানোর ক্রোধ।

০৬ এপ্রিল ২০১৫

অলস দুপুরে আলাপ...

“কবিতা লিখতে কারো কাগজ-কলমই দরকার হয়, কারো স্মার্টফোনই যথেষ্ট:
ঈয়নের সাথে অনলাইন আলাপ” - এই ছিলো শিরোনাম।

শৈশব থেকেই কাব্যচর্চা ভালো লাগে। টুকটাক লেখালেখির শুরুও তখন। হয়ত কোনো শিশুতোষ বাসনাও ছিলো মনে। কিন্তু বয়সের সাথে সাথে লেখার কারণ ও ধরণ বদলেছে বার বার। বস্তুত বহু বছর আমি পদ্য লেখার কোনো কারণই খুঁজে পাইনি। শুধু মনে হত - ভালো লাগছে, তাই  লিখছি। অমনই এক সময়ে এসব নিয়ে আলাপ হয়েছিলো দুপুর’দা, মানে দুপুর মিত্রের সাথে, এ প্রায় দু’বছর আগে। ২০১৩ সেপ্টেম্বরে অলস দুপুর ব্লগে প্রকাশিত হয় সে আলাপ। সেখান থেকেই টুকে এনে  press & pleasure - pap পাঠকদের জন্য এটি পুনরায় প্রকাশ করা হলো।

দুপুর মিত্র: আপনি কেন কবিতা লিখেন?
ঈয়ন: এ প্রশ্নটা জ্বালিয়েছে অজস্রবার, আর প্রতিবারই খুঁজে পাইনি কোন সদুত্তর। অবশেষে মেনে নিয়েছি হুদাই এই লেখা-লিখি বা বিতৃঞ্চাচ্ছন্ন ভালবাসার আশ্রয় এ ঘোর মগ্নতা। তাই যেতে যেতেই ফিরে আসতে হয় ছন্দ-শব্দের কাঁটা-কুঁটি খেলায়। কবিতার জন্য কবিতারা জন্মাক, সব কথক না হোক কবি আর পৃথিবী না হোক কাব্যময়; তবু কবিতারা জন্মাক। কবিতা দিয়ে দেশ উদ্ধারে নামিনি, চাইনি কোন বিপ্লব ঘটাতে। ডান বা বামপন্থি মতবাদে ভারাক্রান্ত বাহবা কুড়াঁনোর ইচ্ছেরা থাক স্বেচ্ছা নির্বাসনে। তবুও লিখে যাই, আজও বারে বার ফিরে যাই আপনার ঘোরে- আপন করে লুটে নিতে সব সুখ; কবি-জ্বরে জ্বরাগ্রস্ত মসী মুখ ডোবায় বারুদের শরবতে। অবশেষে স্বার্থপরের মত শুধু নিজেরই জন্য লিখে যাই।

দুপুর মিত্র: কবিতা লেখার জন্য একজন কবির কি ধরণের প্রস্তুতি দরকার?
ঈয়ন: এটা কবি ভেদে ভিন্ন। যেমন কারো কাগজ-কলমই দরকার হয়, কারো স্মার্টফোনই যথেষ্ট।

Dupur Mitra, is a poet and fiction writer
from Bangladesh. Studied PhD from
Jahangirnagar University, Dhaka in
biodiversity and forest management. His
published two books in Bangla, named
44 Kobeta (44 poetry) and
Doshovuza (collection of short stories).
দুপুর মিত্র: সমসাময়িক কাদের কবিতাকে আপনার ভাল লাগে এবং কেন? সমসাময়িক কাদের কবিতাকে আপনার খারাপ লাগে এবং কেন?
ঈয়ন: সমসাময়িক যাদের কবিতা পড়া হয়েছে তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই কোনো না কোনো কবিতা ভালো লেগেছে। আবার কোনো কোনোটা খারাপ লেগেছে। এটা মূলত পাঠকালীন সময়ের মানুসিকাবস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন। এই মুহুর্তে একটি লাইন আমাকে যে ইমেজ দেবে, একটু পরই তা ভিন্নতর হতে বাধ্য। এ কারণে একই কবিতা কখনো খুবই ভালো, আবার কখনো খুবই ফালতু লেগেছে।

দুপুর মিত্র: নব্বই ও শূন্য এই দুই দশককে আপনি খুব কাছে থেকে দেখেছেন। এ বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?
ঈয়ন: মূল্যায়নের স্বরূপই বোঝা হয়নি আজও।

দুপুর মিত্র: পশ্চিমবঙ্গের কবিতা আর বাংলাদেশের কবিতার ফারাকটা কোথায়?
ঈয়ন: কবি থেকে কবিতে যে ফারাক, এখানেও তাই।

দুপুর মিত্র: ব্লগ সাহিত্যকে কি বিশেষ কিছু দিচ্ছে?
ঈয়ন: শুধু ব্লগ কেনো, ফেসবুক, টুইটার থেকে শুরু করে নতুন যে কোনো কিছই সাহিত্যকে কিছু না কিছু দিচ্ছে। তবে তা বিশেষ কিছু হয়ে ওঠার বিষয়টি সময় ও ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন।

দুপুর মিত্র: লিটলম্যাগের চাইতে ব্লগ গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনার মনে হয় কি? হলে কেন না হলে কেন নয়?
ঈয়ন: লিটলম্যাগ বা ব্লগের গুরুত্বও সময় এবং ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন। গুরুত্বের মাপকাঠিও তো আর স্থির নয়।

দুপুর মিত্র: দৈনিকে সাম্প্রতিক সাহিত্য বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?
ঈয়ন: বোঝে নাই যে পর্যবেক্ষণ, আত্মমগ্ন ক্ষ্যাপাটের মন।
newsreel [সংবাদচিত্র]