Powered By Blogger
৩ মার্চ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
৩ মার্চ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

০৩ মার্চ ২০২১

শাসনতন্ত্র আমরাই রচনা করবো: বঙ্গবন্ধু

ছবি: সংগ্রহিত
আজ ৩ মার্চ। অগ্নিঝড়া একাত্তরের এই দিনটিও উত্তাল ছিল আন্দোলনে। এটিই ছিল জাতীয় পরিষদ অধিবেশন বসার পূর্ব ঘোষিত দিন। কিন্তু এই দিন সমগ্র বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান প্রদেশে) জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঢাকায় দ্বিতীয় দিনের মতো এবং সমগ্র বাংলাদেশে প্রথম দিনের জন্য সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। এ সময় দেশের সব শহরের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যায়। হরতাল চলাকালে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত মিছিলে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণে ও বিভিন্ন ঘটনায় সারাদেশে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়। ঢাকা ছাড়াও রংপুর এবং সিলেটে কারফিউ জারি করা হয়।

রংপুওে এই দিন পাক সেনাবাহিনী ও জনতার মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে দুপুর আড়াইটা থেকে ২৪ ঘন্টাব্যাপী কারফিউ জারি করা হয়। সিলেটে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। ঢাকায় কারফিউয়ের মেয়াদ শিথিল করে রাত ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত বলবৎ করা হয়।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এক ঘোষণায় ১০ মার্চ ঢাকায় নেতৃবৃন্দের সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। রাওয়ালপিন্ডির প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে ঘোষণা করা হয়, এই সম্মেলন অনুষ্ঠানের পর দুই সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। 
ইয়াহিয়ার আমন্ত্রণ তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানী নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক নিয়মে প্রণীত এক শাসনতন্ত্র যদি না চান তাহলে আপনাদের শাসনতন্ত্র আপনারা রচনা করুন। বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র আমরাই রচনা করবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই দিন বটতলায় জমায়েত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে তাদের একাত্মতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু পল্টন ময়দানে এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন এবং ৭ মার্চ পর্যন্ত সংগ্রামের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কিন্তু জনতা তার কাছে তাৎক্ষণিক এবং সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার দাবি জানায়। 

এদিন স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ‘স্বাধীনতার ইশতাহার’ ঘোষণা করে। ছাত্রনেতা এএসএম আবদুর রব, আবদুল কুদ্দুস মাখন, নূরে আলম সিদ্দিকী এবং শাহজাহান সিরাজের যৌথ নেতৃত্বের এই পরিষদ ইস্তেহারও বিলি করে। ইস্তেহারে বলা হয়েছিল ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা এত দ্বারা ঘোষণা করা হলো। বাংলাদেশ এখন এক স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ।’ এতে এর তিনটি লক্ষ্যের কথা উল্লেখ ছিল। এগুলো হচ্ছে বাঙালির ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির পূর্ণ বিকাশ, বৈষম্যের নিরসন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। একইসঙ্গে এতে আন্দোলনের ধারা হিসেবে খাজনা ট্যাক্স বন্ধ এবং সশস্ত্র সংগ্রামের কথা বলা হয়।

এর আগে সমাবেশের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বুলেটে আহতদের জীবন রক্ষার জন্য জনগণের প্রতি ব্লাড ব্যাংকে রক্তদানের উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি জনসাধারণকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বাংলার স্বাধিকার বিরোধী বিশেষ মহল নিজস্ব এজেন্টদের দিয়ে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ও উচ্ছৃঙ্খল ঘটনা ঘটাচ্ছে। স্বাধিকার আন্দোলন বিপথগামী করার এ অশুভ চক্রান্ত রুখতেই হবে।
newsreel [সংবাদচিত্র]