Powered By Blogger
ইয়াহিয়া খান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ইয়াহিয়া খান লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

০১ মার্চ ২০২১

ইয়াহিয়ায় ঘোষণায় ঢাকায় প্রতিরোধ

বঙ্গবন্ধু’১৯৭১ / সূত্র: mujib100.gov.bd
বছর ঘুরে আবারো এসেছে বাঙালীর গৌরবজ্জল সংগ্রামের মাস। একাত্তরের এই মার্চে হাজার বছরের ঔপনিবেশিক পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার জোয়ার এনেছিল নদীমাতায়। তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনার মতো শ্লোগানগুলো ছড়িয়ে পড়েছিলো সারাবাংলায়। কী এক যাদুর পরশে বাংলাকে জাগিয়ে তুলেছিলেন এক অগ্নিপুরুষ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ মাসেই তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। 

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত মধ্য রাতে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। রাত ১২টার পর অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহওে গ্রেফতার হবার একটু আগে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন, যা চট্টগ্রামে অবস্থিত তৎকালীন ইপিআর -এর ট্রান্সমিটারে করে প্রচার করার জন্য পাঠানো হয়। 

ঘোষণায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।’

এই ঘোষণাপত্রটি প্রথমে বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কাসেমসহ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের কয়েক কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এমএ হান্নান প্রচার করেন। পরে বাঙালি সেনা অফিসার মেজর জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

জিয়ার ভাষ্য ছিল, ‘আমি, মেজর জিয়া। বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির প্রাদেশিক কমান্ডার-ইন-চিফ, শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি। আমি আরো ঘোষণা করছি যে, আমরা শেখ মুজিবর রহমানের অধীনে একটি সার্বভৌম ও আইনসিদ্ধ সরকার গঠন করেছি যা আইন ও সংবিধান অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

জিয়া আরো বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের সরকার জোট-নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলতে বদ্ধপরিকর। এ রাষ্ট্র সকল জাতির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং বিশ্বশান্তির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আমি সকল দেশের সরকারকে তাদের নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। 

এর আগে একাত্তরের এই দিনে, অর্থাৎ পহেলা মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের নির্ধারিত অধিবেশন বাতিল ঘোষণা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকায় প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ হোটেল পূর্বানীর সামনে জমায়েত হয়। সেখানে তখন বঙ্গবন্ধুর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল বৈঠক চলছিল। উত্তেজিত জনতা বঙ্গবন্ধুর কাছে অবিলম্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার দাবি জানান। তিনি এই এ সিদ্ধান্তকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দেন এবং এর প্রতিবাদে ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল আহবান করেন। বঙ্গবন্ধু জনতাকে সংযত থাকতে উপদেশ দেন এবং ৭ মার্চ পর্যন্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন যে, ৭ মার্চ তিনি রেসকোর্স ময়দানে জাতির উদ্দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণী ঘোষণা দেবেন। 

পরে ১৯৭৩ সালের ১ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে জয় লাভ করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। 

newsreel [সংবাদচিত্র]