Powered By Blogger

২৮ এপ্রিল ২০২০

গণমাধ্যম: বিনিয়োগের চরিত্র বিশ্লেষণ

কয়েকজন বাংলাদেশি সংবাদকর্মী।
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের করোনাকালীন সংকট বিষয়ক সাম্প্রতিক আলোচনায় রাষ্ট্রের অসহযোগীতা, সাংবাদিকদের অনৈক্যসহ আরো নানা বিষয় আলোচনায় আসছে। ঘাঁটতে গিয়ে মনে হলো, এক্ষেত্রে বিনিয়োগের চরিত্র বা মালিকদের স্বভাব বিশ্লেষণ সবচেয়ে জরুরী।

প্রবীণ সাংবাদিক আফসান চৌধুরীর মতে, দেশের গণমাধ্যমের বেশিরভাগ মালিকই এদিক সেদিক করে পয়সা বানায়, সরকারের সাথে খাতির করে। তাদের সঙ্গে বাজারের সম্পর্ক নেই। স্রেফ ইজ্জত বাড়াতে বা নানা উপায়ে অর্জিত সম্পদ নিরাপদে রাখার জন্য গণমাধ্যম চালু রাখে। 
“তারা গণমাধ্যম দিয়ে মুনাফা করতে চান না, বরং সেখানে উপরি আয়টা ব্যবহার করতে চান। সেই আয় কমে গেলে তারা আর এটা টানতে আগ্রহী হন না। মালিকের দুইশ কোটি টাকা থাকলেও তখন তিনি বেতন দেবেন না। এটা আমাদের গণমাধ্যমের কাঠামোগত সমস্যা,” বলেন আফসান চৌধুরী। 
ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই খণ্ডকালীন শিক্ষকের দাবি, “স্রেফ ক্ষমতাচর্চার জন্য এত গণমাধ্যম চালু রাখার বিপদটা কী হতে পারে এবার তারই বড় একটি প্রমাণ পেলাম আমরা। মূলত এ কারণেই করোনাভাইরাস জনিত সঙ্কটের প্রথম ধাক্কাতেই আক্রান্ত গণমাধ্যম।” 

এ ব্যাপারে গণমাধ্যম বিশ্লেষক খন্দকার আলী আর রাজি বলেন, “করোনা না এলেও বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের জন্য এই পরিণতি এড়ানো কঠিন ছিল। কারণ মানুষের সংবাদ কেনার সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে এগুলো গড়ে ওঠেনি। আবার যে ধরনের সংবাদের জন্য মানুষ মূল্য দিতে রাজি, সে ধরনের সংবাদ পরিবেশন করে না তারা।” 

“ভোক্তার চাহিদার সাথে সম্পর্কহীন সংবাদমাধ্যম যে টিকে থাকার কথা না তা এ মুহূর্তে কিছুটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যদিও ইতিহাস বলে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম সরকারকে বিবিধ সেবা দেওয়ার মাধ্যমে তাদের অস্তিত্ব একভাবে রক্ষা করে চলবে,” যোগ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই সহকারী অধ্যাপক।

সম্পর্কিত পোস্টঃ

২৭ এপ্রিল ২০২০

করোনা কালের সাংবাদিকতা

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিচ্ছন্নতা 
কর্মী সুফিয়া বেগম; কাজ শেষে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে 
ফুটপাতে বসে একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলেন। কোভিড-১৯ সামলাতে 
সরকার ঘোষিত বাধ্যতামূলক ছুটির কালেও প্রতিদিন জঞ্জাল 
পরিস্কার করতে বের হয়েছেন। যদিও সাথে থাকা ব্যাগে 
ডিএনসিসির ‘ইউনিফর্ম’ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। 
ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই কী তা জানেন-ই 
না তিনি। ছবিটির ঢাকার এক সাংবাদিকের তোলা। 
চাকরি আর বেতনের অনিশ্চয়তা গা সওয়া হয়ে গেছে আমাদের, মানে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের। যদিও বিশ্বব্যাপী সংক্রমিত করোনাভাইরাসের প্রথম ধাক্কায় এই সংকট আরও প্রকট হয়েছে। এর সাথে নতুনতর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি-তো আছেই। তবে ইদানীং সবচেয়ে ভয়াবহভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষমতাধরদের রোষানল। যে কারণে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরবর্তী পরিস্থিতিতে সাংবাদিকতা ক্রমেই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। 

এই মহামারীর কালে দেশের প্রথম সাঁড়ির অনলাইন পোর্টাল বিডি নিউজের প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী এবং জাগো নিউজের সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মহিউদ্দিন সরকারসহ মোট আটজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে ২২ এপ্রিল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি। 

সংগঠনটির দাবি, সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে দুর্নীতি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষনা থাকা সত্ত্বেও সাংবাদিকরা যখন এমন দুর্নীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন কিংবা প্রকাশের জন্য অনুসন্ধান করছেন, তখন তারা নিপীড়নমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ নানারকম হয়রানি, শারীরিক হামলা, ভয়ভীতি-হুমকি এবং হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। 

“মামলাগুলো অবিলম্বে তুলে নেয়ার আহবান জানিয়েছি আমরা। আমাদের দাবি নিপীড়নমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অজুহাতে সরকার তাঁদের (সাংবাদিকদের) হয়রানি বা গ্রেফতার করা থেকে বিরত থাকবে,” বলা হয় বিবৃতিতে। 

এর আগে ২১ এপ্রিল সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের পক্ষে দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম এক বিবৃতিতে বলেন, “করোনাভাইসের মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি গণমাধ্যম যখন শত প্রতিকূলতার মধ্যেও দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে, তখন এই ধরনের হয়রানি ও ভয় দেখানোর চেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক।” 

একইদিন প্যারিসভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার (আরএসএফ) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স (ডব্লিউপিএফআই), তথা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাবিষয়ক বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের একধাপ অবনতি হয়েছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এখন ১৫১ তম। টানা ছয় বছর এই অবস্থান ১৪৪ থেকে ১৪৬-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করার পর গত বছর এক ধাক্কায় চার ধাপ নেমে ১৫০ হয়েছিল। 

এ নিয়ে আলাপের জন্য যোগাযোগ করা হলে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান জানান, তিনি এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। সূচকের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে আরএফএস যা বলেছে, তা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য চাওয়া হলে বেনারকে তিনি বলেন, “পরে আমি এ সম্পর্কে মন্তব্য করব।” পরবর্তীতে পুনরায় যোগাযোগের পর তিনি এনিয়ে কথা বলতেই অস্বীকৃতি জানান। 

সূচকের বিশ্লেষণে আরএফএস বলেছে, ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং এর নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রহণ করা কঠোরতর নীতির অন্যতম প্রধান ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে সাংবাদিকরা রয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে সংবাদকর্মীদের ওপর রাজনৈতিক কর্মীদের হামলা, নিউজ ওয়েবসাইট বন্ধ এবং সাংবাদিক গ্রেফতারের ঘটনা বেড়েছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বিচারিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে নির্বাহীরা। এই আইনে নেতিবাচক প্রচারণার শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড। ফলস্বরূপ, স্ব-সেন্সরশিপ অভূতপূর্ব স্তরে পৌঁছেছে কারণ সম্পাদকরা কারাবন্দি বা তাদের মিডিয়া আউটলেট বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি নিতে নারাজ। এছাড়া যেসব সাংবাদিক এবং ব্লগাররা সমাজে ধর্মনিরপেক্ষ মত ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে চান তারা উগ্রবাদী ইসলামপন্থীদের হয়রানি, এমনকি হত্যার শিকার হচ্ছে। 

সার্বিক সূচক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আরএসএফ মহাসচিব ক্রিস্টোফ ডিলোয়ার বলেন, “আমরা সাংবাদিকতার জন্য এমন একটি অবধারিত দশকে প্রবেশ করছি, যা এর ভবিষ্যতের ওপর প্রভাবসঞ্চারী সঙ্কটের সাথে যুক্ত। করোনাভাইরাস মহামারীটি নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়ার অধিকারকে হুমকীতে ফেলা নেতিবাচক কারণগুলোকে সামনে নিয়ে এসেছে এবং এটি নিজেই একটি উদ্বেগের কারণ। ২০৩০ সালে তথ্য, বহুত্ববাদ এবং নির্ভরযোগ্যতার স্বাধীনতা কেমন হবে? এই প্রশ্নের উত্তর আজেই নির্ধারিত হচ্ছে।” 

ঠিক তখনই এই সূচকটি প্রকাশিত হলো যখন করোনাভাইরাসের প্রথম ধাক্কাতেই নজিরবিহীন সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে দেশের সংবাদ শিল্প ও সাংবাদিকরা। কয়েকদিন আগে ঢাকার মূলধারার বেশ কিছু জাতীয় দৈনিকের মুদ্রণ বন্ধের ঘটনাসহ শীর্ষস্থানীয়পত্রিকাগুলোর কলেবর আর প্রচার কমিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে লিখেছিলাম। ততোদিনে সরকারের কাছে সাংবাদিকদের জন্য প্রণোদনা চাওয়া হয়েছে। তখনই জেনেছিলাম, আয় সঙ্কটে সাংবাদিক-কর্মচারীদের বেতন নিয়েও জটিলতাতৈরী হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানে। বাড়ছে সাংবাদিক এবং সংবাদপত্র বিতরণকারীদের বেকারত্ব। 

“আমার ৪৭ বছরের সাংবাদিকতার জীবনে এমন পরিস্থিতি কখনও দেখিনি। যেসব জায়গায় আমি লেখি, কেউই গত তিন মাসে পয়সা দিতে পারেনি। অনেক নামিদামি পত্রিকাও লেখক সম্মাণী দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু গণমাধ্যম হয়ত বন্ধই হয়ে যাবে,” বলেছিলেন ৬৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি গবেষক ও সাংবাদিক আফসান চৌধুরী। তাঁর মতে, “এটা শুধু সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে হচ্ছে তা নয়, বেসরকারি খাতের সকল পেশার ক্ষেত্রে হচ্ছে। এই ধরণের পরিস্থিতি কেউ কোনোদিন পড়েনি। এবারের সঙ্কটটা সবার। তবে আমাদের গণমাধ্যমগুলোর ক্ষেত্রে এটা আরো তীব্র, কারণ এগুলোর প্রায় প্রত্যেকটিকে সাংঘাতিক রকম ভর্তুকি দিয়ে চালানো হয়।”
  
এসব নিয়ে আরও লিখতে হবে, মানে লিখবো নিশ্চয়।। আজ শুধু সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা টুকে রাখছি।
২৩ এপ্রিল : নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জে চাল আত্মসাতের অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য আনতে গেলে হামলার শিকার হন এসএ টিভির প্রতিনিধি সজল ভূঁইয়া।ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সামনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়।  
২১ এপ্রিল : প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে নাম উল্লেখ না করায় ব্যবসায়ী নেতার বিরুদ্ধে সাংসদপন্থীদের বিক্ষোভ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় নরসিংদীর স্থানীয় নিউজ পোর্টাল সময়নিউজ ডটকমের সম্পাদক হৃদয় খান ও প্রকাশক শফিকুল ইসলাম মতির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। এই দুই সাংবাদিক সম্পর্কে বাবা-ছেলে। হৃদয় খান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ ‍টুয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করছেন।  
একইদিন ঠাকুরগাঁওয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ লিটুকে পৌর শহরের দুরামারী নামক স্থানে সদর থানার টহল পুলিশ মারধর করে। এছাড়া সিলেটের জৈন্তাপুরে সারীঘাটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগীর সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি রেজওয়ান করিম সাব্বিরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।  
১৯ এপ্রিল : গলাচিপা পৌর এলাকার কয়েকজন ছেলে কাঁটাখালী বাজার আওয়ামী লীগ অফিসে যুবলীগ সভাপতি রিয়াজ খলিফার পুলিশের ওপর হামলা চালানোর ছবি তুলতে গেলে এতে মাই টিভি ও এশিয়ান টিভির প্রতিনিধিকে মারধর করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।  
১৮ এপ্রিল : চাল চুরির সংবাদ প্রকাশের জেরে অনলাইন নিউজপোর্টাল বিডিনিউজ ও জাগোনিউজের সম্পাদকসহ চারজনের বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি থানায় মামলা দায়ের করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোমিনুল ইসলাম ভাসানী। এজাহারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে।  
একইদিন সাভারে মারধারের শিকার হন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রতিনিধি ওমর ফারুক, শরীয়তপুরে অনলাইন জয়যাত্রা টিভি ও অগ্রযাত্রা পত্রিকার জেলা প্র‌তি‌নি‌ধি মহসিন রেজা ও দৈ‌নিক আমা‌দের কন্ঠ পত্রিকার সোহাগ খান সুজন এবং বরিশালে বাংলাভিশন চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান কামাল হাওলাদার।  
জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার নঈম মিয়ার বাজারে ইত্তেফাক পত্রিকার সংবাদদাতা এম শাহীন আল আমীন ছবি তুলতে গেলে পৌর মেয়রের লোকজন মারধর করে তাঁর ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেয়। তবে পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর মারধরের বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, “ছবি তুলতে নিষেধ করার পরও তিনি ছবি তুলেছিলেন। তাই ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।” 
এছাড়া এই দিন সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করায় দৈনিক যুগান্তরের সাভার প্রতিনিধি মতিউর রহমান ভান্ডারিকে ফোনে হুমকি দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব। তিনি সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও। সাংবাদিককে শাসিয়ে বলেন, “তোমার পেছনে আজকে থেকে মনে করবা আবার অন্য ধরনের কিছু সাংবাদিক ঘুরবে। তোমার সম্পাদককে বইলা রাখো তুমি।”
১৬ এপ্রিল : রাজধানীর দক্ষিণখান থানার মাজার এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবীতে ইনসাফ গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মালিক পক্ষের হামলার শিকার হন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ক্রাইম অনুসন্ধানের সাংবাদিক তমা। ওই গার্মেন্টসের বিষয়ে কোনও সংবাদ প্রকাশ করলে মেরে লাশ গুম করে দেওয়ারও হুমকী দেওয়া হয় তাঁকে। 
১৫ এপ্রিল : লকডাউনের মধ্যেও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা শ্রমিকদের ঠাকুরগাঁওয়ে প্রবেশ অব্যাহত থাকায় ডিসি-এসপিসহ জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আল মামুন নামের এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেন ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানার এসআই মো. জহুরুল ইসলাম । 
১৪ এপ্রিল : গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল ওজনে কম দেয়ার প্রতিবাদ করায় আনন্দ টিভির সাংবাদিক খোরশেদ আলম খানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কাপাসিয়া থানা পুলিশ ওএমএস ডিলার মাসুদ সরকারসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।  
একইদিন মুন্সীগঞ্জে ১০ টাকা মুল্যের চাল বিক্রিতে অনিয়মের খবর ফেসবুকে দেওয়ায় দৈনিক অধিকার পত্রিকার মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি আরফি রিয়াদ এবং তাঁর পরিবারের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।  
এছাড়া এইদিন সাতক্ষীরার তালায় খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক খুলনাঞ্চলের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি খান নাজমুল হুসাইন (২৯), এবং তাঁর ছোট ভাই দৈনিক আজকের সাতক্ষীরার তালা উপজেলা প্রতিনিধি খান আল-মাহবুব (২০) কে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্ত্বরা।  
১২ এপ্রিল : নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার জিরতলী ইউনিয়নের বড় হোসেনপুর গ্রামে ক্রাইম নিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কমের সাংবাদিক মো. পলাশ উদ্দিনের উপর স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন চড়াও হন, তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি ও দেওয়া হয়।  
১০ এপ্রিল : চাল চুরির প্রতিবেদন করায় যুবলীগ নেতার হুমকীতে সস্ত্রীক পালাতে বাধ্য হন আনন্দ টিভির জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রতিনিধি মো. নাসিম উদ্দিন। পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন তিনি।  
৯ এপ্রিল : নারায়ণগঞ্জ থেকে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে ফিরে আসা ১৯ ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় এশিয়ান টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মো. গোলাম মোস্তফাকে মারধর করে তাঁর ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। একই দিন ফতুল্লা থানার কাশিপুর ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় নিম্নআয়ের মানুষদের বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে স্থানীয় মেম্বার আমির হোসেনের দুর্ব্যবহারের শিকার হন সাংবাদিকরা।  
৩ এপ্রিল : হামলার শিকার হয়েছেন দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি নাজমুল সাঈদ সোহেল ও তাঁর পরিবার। 
১ এপ্রিল : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে সরকারি ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের সংবাদ প্রচার করায় সাংবাদিক শাহ সুলতান আহমেদকে ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে পেটান স্থানীয় চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন আরও দুই সাংবাদিক এম মুজিবুর রহমান ও বুলবুল আহমেদ।  
৩১ মার্চ : চাল চুরির খবর ফাঁস করায় ভোলায় সাংবাদিক সাগর চৌধুরীর ওপর মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বড় মানিকা ইউপি চেয়ারম্যান জসিম হায়দারের ছেলে নাবিল হায়দার। ক্ষোভ মেটাতে মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী অপবাদ দিয়ে ওই সাংবাদিককে পেটানোর সময় ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে লাইভ করেছিল সে। 
২৭ মার্চ : প্রশাসনের করোনা সংক্রামণ বিষয়ক সচেতনতা তৈরীর প্রচার-প্রচারণার ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটার শিকার হন বরিশালের আঞ্চলিক দৈনিক দেশ জনপদ পত্রিকার শাফিন আহমেদ রাতুল ও দৈনিক দখিনের মুখ পত্রিকার নাসির উদ্দিন। এদের মধ্যে রাতুল বরিশাল ফটো সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ।
এরই মধ্যে করোনা ভাইরাস বিষয়ক গুজব ঠেকানোর কথা বলে বেশকিছু ওয়েবসাইটের সম্প্রচার বন্ধ করেছে সরকার। সামগ্রিকভাবে সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন ও বার্তা সংস্থায় কর্মরতদের কর্তব্য পালন হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। এরই মধ্যে একের পর এক গণমাধ্যমকর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরও পাচ্ছি।

২১ এপ্রিল ২০২০

২৮ দিনে প্রথম ৫০, পরের ৫ দিনে ৫১ মৃত্যু!

পঙ্গুত্ব বরণের কারণে গত আট-নয় বছর ধরে সোহরাব উদ্বাস্তু, ভিক্ষুক।
তবুও এই কোভিড কালের মতো দুর্দশার সম্মুখীন হননি কখনও।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ ছুঁয়েছিল গত ১৫ এপ্রিল। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার ৪৪ দিনের মধ্যে ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিষয়ক অনলাইন বুলেটিনে সোমবার জানানো হয়, মোট মৃত এখন ১০১, আর আক্রান্ত দুই হাজার ৯৪৮ জন। 

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) দেওয়া পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রথম ৫০ জন মারা গিয়েছে ২৮ দিনে এবং পরের পাঁচদিনে ৫১ জন। 

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে এবং ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা এক থেকে একশ ছাড়াতে, অর্থাৎ ১০১ হতে সময় নিয়েছে মাত্র ৩৩ দিন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. রুহুল ফুরকান সিদ্দিক এই প্রতিবেদককে বলেন, “সংখ্যাটা এখন আস্তে আস্তে আরও বাড়বে। জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধির স্বভাবটা এমনই। প্রথমে কম সংখ্যায় বাড়লেও পরে শত শত, হাজার হাজার বা হাজারেরও বেশী হারে বাড়তে থাকে।” 

“করোনাভাইরাসে মৃত্যুর আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানে নজর দিলেও বিষয়টা পরিস্কার হয়ে যাবে,” যোগ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের এই অধ্যাপক। 

বৈশ্বিক হিসাবে করোনায় মৃতের সংখ্যা এক থেকে প্রথম ৫০ হাজারে পৌঁছাতে লেগেছে ৮২ দিন, আর পরবর্তী ১৫ দিনে মারা গেছে লক্ষাধিক। গত ১১ জানুয়ারি প্রথম মৃত্যুর পর ২ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়ায়; ১৭ এপ্রিলে যা এক লাখ ৫১ হাজার ছয়ে পৌঁছে যায়। 

“তবে হা-হুতাশের বা ভয় দেখানোর দরকার নেই। এখনও সময় আছে। আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়াটাই অনেক বেশী জরুরী। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং সরকারের নির্দেশাবলীগুলো এখন ধর্মীয় শিস্টাচারের মতো পালন করতে হবে,” বলেন ড. রুহুল। 

গত ২৪ ঘন্টায় ৪৯২ জন ভাইরাস আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে বুলেটিনে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ৭২ ঘন্টায় এক হাজার ১১০ জন নতুন কোভিড আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছে, মারা গিয়েছেন ২৬ জন।

“আমরা আসলেই একটা বিপদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমরা যেন ঘরে থাকি, ‘মাস্ক’ ব্যবহার করি, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখি এবং স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলি। তাহলে তা না হলে সংক্রমণ আর মৃত্যুর মিছিল থামাতে পারবো না,” বলেন তিনি। 

সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে সর্বশেষ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের আট জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। অযথা ঘোরাঘুরি করে নিজেকে এবং অন্যের জীবনকেও ঝুঁকির মুখে ফেলবেন না।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা ড. রুহুলের দাবি, “আমরা করোনার প্রবেশই ঠেকিয়ে দিতে পারতাম। কিন্তু সেটি পারিনি। তবে সারা বিশ্ব বা ইউরোপ-আমেরিকার তূলণায় আমাদের অবস্থা এখনও অনেক ভালো আছে।” 

“সরকারের ভুল-ভ্রান্তি বা সমন্বয়হীনতা নিয়ে সমালোচনা করা যেতে পারে, কিন্তু জনগণেরও ভুল আছে। ভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে আমাদের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। অনেক বেশী সাবধান হতে হবে,” বলেন তিনি। 

“আরেকটু সচেতন হলেই বাংলাদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে,” উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার জন্য সারাদেশে ৫০৭ প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। বুলেটিনে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে মোট হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন কোয়ারেন্টিনে আছেন ৮০ হাজার ৪০২ জন, যার মধ্যে ৭৫ হাজার ৭৪৭ জনই বাসায়। 

গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৮৫ জন। প্রতিনিয়ত নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষার হার বেড়েছে বলেও বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়। এর আগে রবিবার ৩১২ এবং শনিবার ৩০৬ জনকে শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। 

গাজীপুরে আক্রান্তের হার বেশী : “গাজীপুরে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এটা প্রায় ২০ (১৯ দশমিক পাঁচ) শতাংশ। এছাড়া কিশোরগঞ্জে ১৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ এবং নরসিংদীতে ছয় শতাংশ। ঢাকায় এবং নারায়ণগঞ্জেও আগের মতোই অনেক বেশী আছে,” বুলেটিনে বলেন ডা.নাসিমা।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে গাজীপুরের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রোববার পর্যন্ত ওই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৭৩। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০৬ জন শনাক্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ২৭৯। এর মধ্যে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ নয় চিকিৎসক, ১২ নার্স ও ৩৪ স্বাস্থ্য কর্মীসহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগেরই মোট ৫৭ জন।

ড. রুহুল বলেন, “ডাক্তার-নার্সদের ঢাল-তলোয়ার ছাড়া যুদ্ধে পাঠালে শুধু তারাই যে মরবে তা নয়, তাদের মাধ্যমেও অনেকে আক্রান্ত হবেন।” এর আগে শনিবারই স্বাস্থ্য বুলেটিনে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছিলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পর বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে গাজীপুর।

জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার পুলিশ সুপার ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, “যে কারখানাগুলো খোলা রয়েছে তারা কোনোরকম স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী) বানানোর কথা বলে শ্রমিকদের ডেকে এনে অন্য পণ্য বানাচ্ছেন।”

“অনেক মালিক রয়েছেন যারা বেতন দেবেন বলে শ্রমিকদের ডেকে নিয়ে আসছেন। কিন্তু বেতন দিতে পারছেন না। তারা শ্রমিকদের ঠকাচ্ছে। এটা ‘লকডাউন’ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অনেক বড় অন্তরায়,” যোগ করেন তিনি। 

পরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব। আমি পরবর্তীতে গার্মেন্টস মালিকদের সঙ্গে বসব। ‘লকডাউন’ নিশ্চিত করে সীমিত পর্যায়ে হলেও উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। তবে এজন্য ডব্লিউএইচও’র শর্ত মেনেই কাজ করতে হবে।”

প্রসঙ্গত, বেতন-ভাতার দাবিতে লকডাউন ভেঙ্গে রাস্তায় নেমে বারবার বিক্ষোভ করেছেন গাজীপুরের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।

সিএমএসডিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং কেন্দ্রীয় ওষধাগারের (সিএমএসডি) কর্মকর্তাদেরদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিভিন্ন মেডিকেল সামগ্রী বুঝে নেওয়ার সময় কেবল মোড়ক না দেখে ভেতরের সবকিছু যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সিএমএসডির পরিচালককে উদ্দেশ্যে করে ভিডিও কনফারেন্সের তিনি বলেন, “লেখা আছে এন-৯৫ কিন্তু ভেতরের জিনিস (মাস্ক) সবসময় সঠিকটা যাচ্ছে না। এর সাপ্লাইয়ার কে? বাবুবাজারের মহানগর হাসপাতালে এগুলো যাচ্ছে। এটা তো করোনাভাইরাসের জন্য ‘ডেডিকেটেড’। এ রকম যদি কিছু কিছু জায়গায় হয়, এটা তো ঠিক নয়।”

“আমি আমাদের মন্ত্রীর কাছে কিছু ছবি পাঠিয়েছি,” যোগ করেন তিনি। তবে বুলেটিনে হাজির হয়ে সিএমএসডি পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদ উল্লাহ দাবি করেন, মহানগর হাসপাতালের এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের জন্য তারা কাউকে অনুমোদন দেননি। 

“বাংলাদেশের যেসব প্রতিষ্ঠান মাস্ক সরবরাহ করে, তাদের স্বাভাবিক মাস্ক সরবরাহ করার জন্য কার্যাদেশ দিয়েছি। যার মান ও যার মূল্য ওধুষ প্রশাসন নির্ধারণ করে,” বলেন তিনি। 
newsreel [সংবাদচিত্র]