Powered By Blogger

২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪

দুঃখিত নই, শঙ্কিত হই

গত দশকেই অনিয়মিত হয়ে গিয়েছিলো চলচ্চিত্র প্রদর্শন। ২০১২’র মাঝামাঝি একেবারে বন্ধ হয়ে যায় প্রেক্ষাগৃহটি। অবশ্য তার আগেই এর নীচতলার সম্মুখভাগের একাংশ পরিণত হয় ‘ভিসিডি’ সেন্টারে। আর এখন মূলত সেটাই শুধু চালু আছে। অর্থাৎ সোহাগ সিনেমা হল এখন সোহাগ ভিসিডি সেন্টার। বরিশালের উপজেলা শহর বানারীপাড়ার একমাত্র প্রেক্ষাগৃহ ছিলো এটি। নিজ নামের রাস্তায়, মানে সোহাগ সিনেমা হল রোডে নিজের ফসিল হয়ে সে আজও দাঁড়িয়ে আছে কি’না ঠিক বলতে পারছি না। কারণ, ছবিটি প্রায় এক বছর আগে (২০ অক্টোবর, ২০১৩) তোলা। নাম দিয়েছিলাম ‘রূপান্তর’ বা ‘the transformation’। ওই সময় স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন, প্রশাসন ‘কাটপিস’ [চলচ্চিত্রের সেন্সর বোর্ড অনুমোদিত চিত্রের বদলে সংযুক্ত পর্নোগ্রাফী] চালাতে না দেয়ার ব্যাপারে কাঠোর হওয়ার পরই মালিকরা হলটি বন্ধ করে দেন। তারা এটি ভেঙে এখানে একটি মার্কেট করার চিন্তা-ভাবনা করছেন বলেও অনেকে শুনেছেন। এখানে জানিয়ে রাখি, তখন ‘নৃ’ নামের একটি চলচ্চিত্র চিত্রায়নের কাজেই যাওয়া হয়েছিলো ওই এলাকায়, মানে বানারীপাড়ায়।
বিভিন্ন গণমাধ্যম, ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের প্রেক্ষাগৃহ বা চলচ্চিত্র সংক্রান্ত কোনো আলোচনা, বিতর্ক দেখলে এ ছবিটির কথাও মনে পরে। একইসঙ্গে স্মরণে আসে, এখানে গত ১০ বছরে কমপক্ষে সাড়ে সাতশ’ সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। গত জুনে (২০১৪) এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলাউদ্দিন জানিয়েছেন, ২০০১ সালেও বাংলাদেশে ১২শ’র বেশী হল ছিলো। কিন্তু এখন টিকে আছে মাত্র সাড়ে চারশ’টি। সমিতির পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে, প্রান্তিক এলাকায় ধুঁকে ধুঁকে টিকে থাকা প্রতিটি হলই যে কোনো মুহুর্তে বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় রয়েছে।
ভালো সিনেমার অভাবে দেশের অনেক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাগৃহেও এখন ‘কাটপিস’ নির্ভর চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। সাধারণত ভিনদেশী জনপ্রিয় নায়ক বা নায়িকার দেহে এ দেশীয়দের ধর বসিয়ে তৈরী করা হয় ওইসব সিনেমার পোস্টার। গত জুনে (২৯ জুন, ২০১৪) পিরোজপুরের সরূপকাঠীর ইন্দ্রেরহাট থেকে নৌ-পথে সুতিয়াকাঠী যাওয়ার পথে চোখে আটকে যায় ওই জাতের এই পোস্টারে, সাথে সাথেই এটি ক্যামেরাবন্দী হয়। ছবিটির নাম দিয়েছিলাম ‘The Censored Publicity’।
শৈশবে পরিবারের সদস্যদের সাথে হলে গিয়ে বাংলা সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা থাকলে এমন চিত্র দেখে অস্বস্তিতে ভুগবেন হয়ত, আমিও ভুগছি। কারণ, চলচ্চিত্রের এ পশ্চাতযাত্রায় দুঃখিত নই, শঙ্কিত হই। দেশী চলচ্চিত্রের দুরাবস্থার সাক্ষ্যদানকারী ওই স্থিরদৃশ্য দুটি ধারণে ডিএসএলআর [Canon EOS 7D ক্যামেরা ও EF-S55-250mm f/4-5.6 IS লেন্স] প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিলো।

কোন মন্তব্য নেই:

newsreel [সংবাদচিত্র]