বিশ্ব শান্তিরক্ষায় যারা সবচে সমাদৃত, সেই পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিজ দেশের শান্তি রক্ষায় কেন ব্যর্থ? জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের এসাইনমেন্টগুলোর চেয়ে নিজ দেশের নির্বাচনকালীন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা মিশনের এসাইনমেন্ট কি খুব বেশী কঠিন ? অথচ নির্বাচনের ক’দিন আগেও না শুনলাম, শান্তিরক্ষী বাহিনীর জন্য আরো এ দেশীয় সৈন্য চাইতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন।
সর্বোচ্চ
সৈন্য সরবরাহকারী এই রাষ্ট্রের পুলিশ
ও সেনাবাহিনীর ৯৮ হাজার ৯৫৯
জন সদস্য বর্তমানে চার
মহাদেশে ১৫টি শান্তিরক্ষা মিশনে
কাজ করছেন। এদিকে,
৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ
নির্বাচন ও তার আগে-পরের আইন-শৃঙ্খলা
রক্ষার মিশনে আজ ৯
জানুয়ারি অবধি মাঠে আছেন
প্রায় ছয় লাখ সদস্য। এর
মধ্যে দেশের ৫৯ জেলায় আইনশৃঙ্খলা
রক্ষার স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে একজন
লে. কর্নেল পদমর্যাদার কর্মকর্তার
অধীনে ৮০০ জন করে
সেনাসদস্য রয়েছেন। আর
এদের উপস্থিতিতেই ঘটছে একের পর
এক সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস। যদিও
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার
৭ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলন
করে জানিয়েছেন, নির্বাচন পরবর্তী নাশকতার ঝুঁকিতে থাকা এলাকা চিহ্নিত
করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবুও
কেউ নিরাপদে নেই। দেশে
চলমান রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় বান কি মুনও
গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচনের
পর দিনই তিনি এ
প্রতিক্রিয়া জানান।
এর
আগেও আমরা দেখেছি - দেশের
যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক
টানাপোড়নের প্রথম শিকার হন
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।
এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রাজনৈতিক
মারপ্যাঁচে নির্বাচনকালীন সময়ে তারাই সবচেয়ে
বেশী নাশকতার ঝুঁকিতে ছিলেন এবং সহিংসতার
শিকারও হয়েছেন।আতঙ্ক
ছড়িয়ে পড়েছে টেকনাফ থেকে
তেঁতুলিয়া। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কে শত
শত হিন্দু পরিবার ফের
দেশ ছাড়ার চিন্তা করতে
বাধ্য হচ্ছে। অথচ
স্বাধীনতার এই ৪২ বছর
পরও কি এমনটা হওয়ার
কথা ছিলো? বাংলাদেশ কি
আসলেই একটি ধর্ম নিরপেক্ষ
অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র?
যত দূর মনে পরে, নির্বাচনকালীন এ দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রায় দেড়শ′ কোটি টাকা চেয়েছিলো পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স; আর সেনাবাহিনী চেয়েছিলো ২৬ কোটি টাকা। এ’তো জনতারই টাকা – আর জনতাই আজ নিরাপত্তাহীন। বিশেষ করে দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। রাজধানীর বিচার, প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে গত ৮ জানুয়ারি জাতীয় আইন কমিশনের এক সেমিনারে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ড. মিজান বলেন, ‘নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সহিংসতায় দেশে হাজার হাজার সংখ্যালঘু আক্রান্ত হয়েছে। নির্বাচনের আগেএক প্রিসাইডিং অফিসারকে হত্যা করা হলো। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর সংখ্যালঘুদের বাড়িতে লুটপাট, হামলা করা হলো।অথচ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী থাকবে বলে সরকার নির্বাচনের আগে আমাদেরআশ্বস্ত করেছিল।" দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারকে এখনই দায়িত্ব নিতে হবে উল্লেখ করে ড. মিজান আরো বলেন, ‘এ ব্যর্থতা যেন দীর্ঘায়িত না হয়, সেই বিষয়ে সরকারকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তোবা দেশবিপন্ন হয়ে যাবে।’
এর
আগে ৭ জানুয়ারি সংখ্যালঘু
সম্প্রদায়ের ওপর মধ্যযুগীয়
কায়দায় হামলার প্রতিবাদে এক
বিক্ষোভ সমাবেশ ও কালো
পতাকা নিয়ে মৌন মিছিল
করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে
(টিএসসি) বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তির দাবি জানান।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা ও
নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ
বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে আজ লজ্জায় মাথা
হেট হয়ে যাচ্ছে।
শুধু ভিন্নধর্মের কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের
জনগোষ্ঠী বর্বর হামলার শিকার
হচ্ছে।’
প্রবীণ
অভিনেতা রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘প্রতিটি
জাতীয় নির্বাচনের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের
ওপর হামলা এখন নিয়মে
পরিণত হয়েছে। এসব ঘটনার পর
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক
নেতাকর্মীরা গিয়ে সমবেদনা জানান।
তারপর আবারও একই ঘটনার
পুনরাবৃত্তি ঘটে। কিন্তু অপরাধীরা বার
বারই পার পেয়ে যাচ্ছে।’
সংখ্যালঘুদের
রক্ষায় সচেতন জনতার প্রতিবাদ
ও প্রতিরোধ বাড়ছে। একইসঙ্গে
বাড়ছে এই ইস্যুর রাজনৈতিক
ব্যবহার। আমাদের
অভিভাবক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কিন্তু
নিরব নন। নির্বাচন
ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে বিরোধীরাই
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করছে
বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এ
ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ
করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এসব বন্ধ না
করলে যথাযথ কঠোর ব্যবস্থা
নেয়া হবে। যেসব
জায়গায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে
সেখানে কম্বিং অপারেশন চালানোর
জন্য ইতোমধ্যে যৌথবাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ব্যাপক অভিযান চালিয়ে জড়িত
সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।’ বিরোধীরা
আবার সরকার প্রধানের এমন
অভিযোগ মেনে নিতে নারাজ। তাদের
দাবি, এসব সরকারি নাটকেরই
অংশ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘একতরফা নির্বাচন দেশবাসী স্বতঃস্ফুর্তভাবে বর্জন করায় দেশ-বিদেশে বিভিন্ন
রাষ্ট্র ও সংস্থার প্রবল সমালোচনা চলছে। এই জনদৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত
করার দেশব্যাপী সংখ্যালঘু হিন্দু
সম্প্রদায়ের ওপর পরিকল্পিত হামলা করা হচ্ছে।’
আরো প্রশ্ন ও প্রতিবাদ
নির্বাচনের
আগে-পরে সাম্প্রদায়িক হামলার
আশঙ্কা রয়েছে জানা সত্ত্বেও
কেন তা প্রতিরোধে ব্যর্থ
হলেন? কেন এসব আক্রান্ত
জনপদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি? এ
ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা বারবার হলেও
একটিরও বিচার কেন হয়নি?
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে বিক্ষুব্ধ জনতা’ আয়োজিত সংবাদ
সম্মেলনে গত ৮ জানুয়ারি
নির্বাচন কমিশন ও সরকারের
কাছে এসব প্রশ্নের উত্তর
জানতে চেয়েছেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন
করেন শিপ্রা বোস।
তিনি বলেন, ‘মুখে অসাম্প্রদায়িকতার
কথা শোনালেও দেশের সরকার ও
রাজনৈতিক দলগুলো আজও বাংলাদেশকে
অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক দেশ
হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ
ব্যর্থতার দায়ভার সরকার, বিরোধী
দল সবার।’ লিখিত
বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মূল ও সাম্প্রদায়িক
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধের
দাবিও জানানো হয়। একই
দিনে সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত
এলাকায় আক্রমণে উদ্বেগ ও প্রতিবাদ
জানিয়েছে ‘বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও’। সংগঠনের
পক্ষ থেকে পাঠানো এক
বিবৃতিতে প্রশাসনকে সক্রিয় ও দৃঢ়
অবস্থান নেওয়ার দাবি জানানো
হয়। একই
সঙ্গে দেশের সর্বত্র এ
ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য
সর্বসাধারণকে আহ্বান জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে
বলা হয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র
করে সারা দেশে রাজনৈতিক
সহিংসতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও প্রাণহানির পাশাপাশি
সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত এলাকায় ভয়ভীতি প্রদর্শন
ও আক্রমণ করা হয়েছে। জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের হাতে যশোর, দিনাজপুর,
গাইবান্ধা, রংপুর ও চট্টগ্রামে
সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আক্রান্ত হয়েছে। হিন্দুদের
বাড়িঘর, দোকান ও মন্দিরে
হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে
তারা। প্রাণের
ভয়ে শিশু, নারী-পুরুষ,
বৃদ্ধরা বসতবাড়ি ছেড়ে নদী পার
হয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য
হয়েছেন। দুর্বৃত্তরা
দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের
সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো সত্ত্বেও
প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিতে
পারেনি বলে অভিযোগ আছে। বিবৃতিতে
আরও বলা হয়, যুদ্ধাপরাধের
বিচারের রায়কে কেন্দ্র করে
জামায়াত-শিবির গত বছর
ফেব্রুয়ারি থেকে রাজনৈতিক ও
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চালিয়ে আসছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ের মতো স্বাধীনতার
সপক্ষের নেতা-কর্মী ও
ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত
হয়েছে। শতাধিক
মন্দির-বিগ্রহ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। তাদের
মূল লক্ষ্য যুদ্ধাপরাধের রায়
বানচাল করা। ধর্মীয়
সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগে বাধ্য করা এবং
বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে
পরিণত করা।
হচ্ছে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল
সংখ্যালঘু
সম্প্রদায়ের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত
বিচার করতে এ-সংক্রান্ত
সব মামলা দ্রুত বিচার
ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এছাড়া ১৯৭৫ সালের ১৫
আগস্টের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের
ওপর নির্যাতনকারীদের বিচার করতে বিশেষ
ট্রাইব্যুনাল গঠন করার সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,
স্বরাষ্ট্রসচিব সি কিউ কে
মুসতাক আহমেদ সংখ্যালঘুদের ওপর
হামলাকারীদের বিচার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের
আইন শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে
জরুরি বৈঠক করে এ
সিদ্ধান্ত নেন। বৈঠকের
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের যেসব স্থানে
সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয়
প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে, সেসব
এলাকার দ্রুত বিচারযোগ্য মামলাগুলোকে
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর
জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে আজ
৯ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো
হবে।
একই
সঙ্গে সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, রামুসহ বিভিন্ন স্থানে
এ পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নির্যাতন,
হত্যা, ধর্ষণ, বাড়ি লুট
ও সম্পত্তি দখলের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে
দায়ের করা মামলাগুলোর দ্রুত
বিচার করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল
গঠন করার প্রস্তাবও আজ
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
রেজা ঘটকের ব্লগ থেকে
বাংলাদেশে বারবার নির্বাচনকালীন সময়ে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর পরিকল্পিত এই হামলাকে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত ঘটনা বলে বারবার পাশ কাটিয়ে যাবার কোনো সুযোগ নেই। বরং নির্বাচন কালীন সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্পদায়ের উপর বারবারই এই হামলা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত, সুচিন্তিত এবং সুসংগঠিতভাবেই করা হয়েছে। আর এই হামলার পেছনে নির্বাচনের সময়কে বেছে নেবার পেছনেও অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই প্রধান। শুধুমাত্র স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত শিবিরের লোকজন এই হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। বরং দেশের প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর লোকজনও এই হামলার পেছনে জড়িত। যখন যারা ক্ষতায় থাকে তারা বিরোধী দলকে এই হামলার দায় দিয়ে নিজেরা ফেরেশতা সাজার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য হল, এই হামলার সঙ্গে দেশের সকল রাজনৈতিক দলের সরাসরি ও পরোক্ষ সম্পর্ক বিদ্যমান। যখন যার প্রয়োজন পড়ে, তখন সে এই হামলা করে বাংলাদেশ থেকে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিন্থ করার পায়তারা করছে বলেই ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।
বাংলাদেশে বারবার নির্বাচনকালীন সময়ে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর পরিকল্পিত এই হামলাকে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত ঘটনা বলে বারবার পাশ কাটিয়ে যাবার কোনো সুযোগ নেই। বরং নির্বাচন কালীন সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্পদায়ের উপর বারবারই এই হামলা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত, সুচিন্তিত এবং সুসংগঠিতভাবেই করা হয়েছে। আর এই হামলার পেছনে নির্বাচনের সময়কে বেছে নেবার পেছনেও অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই প্রধান। শুধুমাত্র স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত শিবিরের লোকজন এই হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। বরং দেশের প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর লোকজনও এই হামলার পেছনে জড়িত। যখন যারা ক্ষতায় থাকে তারা বিরোধী দলকে এই হামলার দায় দিয়ে নিজেরা ফেরেশতা সাজার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য হল, এই হামলার সঙ্গে দেশের সকল রাজনৈতিক দলের সরাসরি ও পরোক্ষ সম্পর্ক বিদ্যমান। যখন যার প্রয়োজন পড়ে, তখন সে এই হামলা করে বাংলাদেশ থেকে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিন্থ করার পায়তারা করছে বলেই ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়।
২০০১ সালের ১ লা অক্টোবর নির্বাচন পরবর্তী সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর একই ধরনের হামলার পর, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ তখন সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন, আমরা ভোটের অধিকার চাই না। আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে নিন। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা দিন। তাদের সেই আবেদনে কেউ তখন সারা দেয়নি। বরং ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও এবারের ৫ জানুয়ারি'র নির্বাচনে সেই ঘটনা আবার আরো তীব্র আকারে ঘটলো। যার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।
১৯৪১ সালের ভারতীয় আদমশুমারি অনুয়ায়ী, বাংলাদেশ ভূখণ্ডে তখন অন্তত শতকরা প্রায় ২৮ ভাগ মানুষ ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান দেশ বিভাগ ও ১৯৪৬-৪৭ সালের হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার পর সেই সংখ্যা ১৯৫১ সালে শতকরা ২২ ভাগে নেমে আসে। তখন বাংলাদেশের অভিজাত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা জানমালের নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারতে চলে যায়। কিন্তু যারা গরিব তাদের আর যাওয়ার সুযোগ রইলো না। তারা এই হাজার বছরের বংশ পরম্পরার জন্ম ভিটেমাটিতেই আগলে রইলেন। পাকিস্তান কায়েম হবার পর সংখ্যালঘুদের উপর নানান ধরণের চাপ ও নির্যাতনের ফলে তখণ থেকেই নিরবে অনেকে বাংলাদেশ ছেড়ে যান। ১৯৬১ সালে সেই সংখ্যা মোট জনসংখ্যার শতকরা ১৮.৫ ভাগে নেমে আসে।
ছবিটি দৈনিক কালের কণ্ঠ থেকে নেয়া। |
বাংলাদেশে
সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর বিভিন্ন সময়ে
রাজনৈতিক ও নির্বাচনকালীন সময়ে
এই হামলা ও সহিংসতা
বন্ধ না হবার কারণে,
২০০১ সালে এসে দেশে
হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র
শতকরা ৯.৬ ভাগে। ২০০১
সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, তখন বাংলাদেশে অন্তত
১ কোটি ১৩ লাখ
৭৯ হাজারের মত সংখ্যালঘু হিন্দু
সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস ছিল।
আর ২০১১ সালের আদমশুমারি
অনুযায়ী, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় শতকরা
৮ ভাগে নেমে আসে। কিন্তু
সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যমান রাজনৈতিক
সহিংসতা ও সংখ্যালঘুদের উপর
বারবার হামলা ও নির্যাতনের
ঘটনায় এই সংখ্যা এখন
প্রকৃত হিসেবে কত, সেটি
বলা কষ্টকর হলেও, ধারণা
করা যায়, এটি শতকরা
৫ ভাগের বেশি হবার
কোনো যুক্তি নেই।
কারণ, ২০১১ সালের আদমশুমারির
পরেও দেশে নিরবে হিন্দু
সম্প্রদায়ের দেশত্যাগের অনেক ঘটনাই ঘটেছে। তাই
বর্তমানে দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের
লোকসংখ্যা শতকরা ৫ ভাগের
বেশি হবে না।
তাছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেখানোর জন্য বাংলাদেশের সরকারি
তথ্য ও হিসেবে অনেক
প্রকৃত তথ্যই এদিক সেদিক
করার অভ্যাস মোটেও মিথ্যে
নয়।
তাহলে
স্বাভাবিক প্রশ্ন জাগে যে,
বাংলাদেশে কি শেষ পর্যন্ত
এভাবে ধীরে ধীরে সংখ্যালঘু
হিন্দু সম্প্রদায় একদিন নিশ্চিন্থ হয়ে
যাবে? এখন যদি আমাকে
কেউ এই প্রশ্ন করেন,
আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, যদি
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এভাবে চলতে থাকে,
তাহলে বাংলাদেশে আগামী বিশ-পঁচিশ
বছরের মধ্যে সংখ্যালঘু হিন্দু
সম্প্রদায় একটি নৃ-গোষ্ঠীতে
পরিনত হতে যাচ্ছে। এর
পেছনে রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য যেমন
দায়ী। তেমনি
বলপ্রয়োগ, রাজনৈতিক চাপ, নির্বাচনে হিন্দু
সম্প্রদায়ের এভাবে নির্মম বলিদান,
ধন সম্পদ লুটপাট, মাদ্রাসা
শিক্ষার প্রসার, দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের
বংশবিস্তার, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিস্তার,
দেশের সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠা,
রাজনৈতিক দলগুলোর এসব হামলার সময়
নিরব দর্শকের ভূমিকা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর
নির্লজ্ব ব্যর্থতা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা না দিতে পারার
রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, প্রতিবেশী দেশ ভারত-পাকিস্তানের
সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়ন, প্রতিবেশী মায়ানমারের জাতিগত দাঙ্গা, দেশের
দুর্বল গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, দেশে
বিদ্যমান অন্যের সম্পত্তি দখলের
লাগাতার সংস্কৃতি, হিন্দু সম্প্রদায়ের নিজস্ব
নিরাপত্তাহীনতা, মিডিয়ার পক্ষপাত আচরণ, আর দেশের
মানুষের মানবতা বিরোধী নির্মম
ঘটনার পরেও স্বাভাবিকভাবে মেনে
নেওয়ার সংস্কৃতি, এসব সম্মিলিত ধারার
যুগপথ ধারার কারণেই ভবিষ্যতে
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় এক
সময় নিশ্চিন্থ হয়ে যেতে পারে।
মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত নিবেদন,
নির্বাচনের পর চলমান রাজনৈতিক
সহিংসতা থেকে সাধারণ মানুষের
নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এখনই আইন শৃঙ্খলা
বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় ব্যবহার করুন। বিশেষ
করে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা
আর যাতে বিঘ্নিত না
হয়, তাদের জানমালের নিরাপত্তা
দেওয়ার পাশাপাশি তাদের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণেরও
ব্যবস্থা করুন। নির্বাচন
কালীন সহিংসতার সকল উপাদান সক্রিয়
থাকা স্বত্ত্বেও কেন দেশের সংখ্যালঘু
সম্প্রদায়ের উপর, বিশেষ করে
হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তা
ব্যবস্থা সরকার গঠন করলো
না, সেই অযুহাত নিয়ে
রাজনীতি না করে বরং
এখনই অবশিষ্ট হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর
যাতে আর একটি হামলাও
না হয়, সেই নিশ্চয়তা
নিশ্চিত করার অনুরোধ করছি। নতুবা
সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম
এটি আরো পাকাপাকিভাবে নিশ্চিত
করে, দেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু
সকল সম্প্রদায়কে একটি নির্দিষ্ট সময়
বেধে দিন, যে অমুক
তারিখের মধ্যে সবাই নিরাপদে
দেশত্যাগ করুন, নইলে অমুক
তারিখে একযোগে হামলা করে
সবাইকে শেষ করা হবে। একটা
কঠোর সিদ্ধান্তে দয়া করে আসুন। বারবার
সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক ঘুটি হিসেবে ব্যবহার
না করে, এই সমস্যার
একটি স্থায়ী সমাধান করুন।
আর
যদি বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক ধর্ম
নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হয়, তাহলে সংবিধানে
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, এটা দশম
সংসদের প্রথম অধিবেসনেই বর্জন
করে ধর্ম নিরপেক্ষ লিখুন। পাশাপাশি
জাতি ধর্ম বর্ণ গোষ্ঠি
নির্বিশেষে সকলকে নিরাপত্তা দেবার
একটি স্থায়ী কার্যকর ব্যবস্থা
করুন। আমরা
এভাবে আর একজনও সংখ্যালঘু'র উপর হামলা
দেখতে চাই না।
আর সংখ্যালঘু নিয়ে রাজনীতিও দেখতে
চাই না। অনেক
বৃদ্ধ হিন্দু মহিলা কান্নাজড়িত
কণ্ঠে দাবী করেছেন, নৌকায়
ভোট দেবার পর আজ
তাদের এই দশা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এখন
শুধু একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানই
নয় দেশের সবচেয়ে বড়
রাজনৈতিক দল। তারা
কেন এই হামলার সময়
পাশে দাঁড়ালো না? সংখ্যালঘুরা কোথায়
ভোট দিলেন, কেন ভোট
দিলেন, সেটি একটি সুসংগঠিত
সুপরিকল্পিত হামলার জন্য অন্যতম
কারণ হতে পারে না। আর
এটি মেনে নেওয়াও যায়
না। একজন
মুসলমান কোথায় ভোট দিলেন,
তার যেহেতু কোনো জবাবদিহিতা
নেই, একটি রাষ্ট্রে কেন
একজন সংখ্যালঘুকে বারবার এই একই
প্রশ্নে নির্মম হামলার শিকার
হতে হবে?
নইলে
আমার যে হিন্দু বন্ধু
সে আমাকে কোন ভরসায়
বিশ্বাস করবে? আমার যে
হিন্দু প্রতিবেশী কোন ভরসায় তারা
আমাদের পাশে বসবাস করবে?
আমাদের যে হিন্দু উৎসব,
কোন ভরসায় তারা সেই
উৎসব করবে? ২০০১ সালের
নির্বাচন পরবর্তী সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার পর
তারা পরের বছর তাদের
সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব
সারদীয় দুর্গাপূজা বর্জন করেছিলেন।
একটি সম্প্রদায় কতো কষ্ট পেলে
নিজেদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয়
উৎসব বর্জনের ঘোষণা দিতে পারে,
সেটি কি আমরা একবারও
অনুমান করতে পারি? আমরা
কি এই হামলার প্রতিবাদে
আগামী ঈদ উৎসব বর্জন
করব? ২০০১ সালে হিন্দু
সম্প্রদায় দাবী করেছিলেন, তারা
ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে
জীবনের নিরাপত্তা চায়। যদি
তাদের নিয়ে সত্যিই কোনো
রাজনীতি না থাকে, তাহলে
তাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে
নিয়ে আগে তাদের নিরাপত্তা
নিশ্চিত করা হোক।
নিরাপত্তা যখন সার্বিকভাবে নিশ্চিত
হবে, তখণ না হয়
তারাই আবার দাবী তুলবে
যে, আমাদের ভোটের অধিকার
এখন ফিরিয়ে দাও।
একটা সমাধান দয়া্ করে
বের করুন। আর
এভাবে মানবতার পরাজয়, সভ্যতার পরাজয়,
হিংসার রাজনীতিতে ধুকে ধুকে শকুনের
হিংস্র থাবার মুখে দেশের
হিন্দু সম্প্রদায়কে বারবার মুখোমুখি করার
সত্যি সত্যিই কোনো অসভ্যতা
আমরা দেখতে চাই না।
আর
সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়কে আহবান
জানাব, আপনারা পাড়ায়-পাড়ায়,
মহল্লায়-মহল্লায় নিজেদের নিরাপত্তার জন্য যুবকদের নিয়ে
নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলুন। যতোক্ষণ
নিজেরা লড়াই করতে পারবেন,
ততোক্ষণ লড়াই করুন।
নিজেদের বসত বাড়ি ব্যবসা
সম্পত্তি ফেলে পালিয়ে শুধু
আত্মরক্ষাই করা যায়, জীবন
সংগ্রাম থেকে পালানো যায়
না। আপনাদের
যুবশ্রেণী যতোক্ষণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে
ততোক্ষণ, আপনারা নিশ্চিত নিরাপদ। পাশাপাশি
আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী যদি
সময় মত সারা না
দেয়, মা বোনেরাও প্রতিরোধের
জন্য তৈরি হোন।
যতোক্ষণ জীবন, ততোক্ষণ লড়াই। একবার
প্রতিরোধ করুন, দেখবেন হামলাকারীরা
পরের হামলাটি করার জন্য একটু
হলেও পিছপা নেবে।
বাংলাদেশে এখনো অনেক অসাম্প্রদায়িক
মুসলমান আছে। তারা
আপনাদের প্রতিবেশী। আপনাদের
বন্ধু। তাদেরকেও
সেই প্রতিরোধ বলয়ে ডাকুন।
নিজেরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য পাড়ায়-পাড়ায়
এভাবে টহল প্রতিরোধ গঠন
করুন। নইলে
বারবার ভয় আর আতংক
আপনাদের মানসিকভাবে আরো দুর্বল করে
দেবে। আর
মানসিকভাবে দুর্বল থাকলে সরকারি
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বেশি দিন
আপনাদের যে পাহারা দিয়ে
বাঁচাতে পারবে না বা
পাহারা দেবে না এটা
আপনারাও হয়তো ভালো করেই
জানেন। পাশপাশি
এই হামলার সকল ঘটনা
বিশ্ববাসীর কাছে নানাভাবে তুলে
ধরে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ
করুন। আপনারা
যতোবেশি সংগঠিত থাকবেন, ততোই
আপনাদের নিরাপত্তা সবল থাকবে।
মনে রাখবেন, যারা হামলা করছে
তারা কিন্তু দলবদ্ধ।
তাই আপনারাও দলবদ্ধ থাকুন।
এর বেশি কিছু বলার
মত আমি ভাষা খুঁজে
পাচ্ছি না। একজন
মুসলিম ঘরের সন্তান হিসেবে
আপনাদের কাছে আমি ক্ষমা
চাচ্ছি। এই
হামলার দায় মুসলিমরা এড়াতে
পারে না। রাষ্ট্র
এড়াতে পারে না।
রাজনৈতিক দলগুলো এড়াতে পারে
না। নির্বাচন
কমিশন এড়াতে পারে না। আইন
শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এড়াতে
পারে না। সত্যি
সত্যিই কেউ এই দায়
এড়াতে পারে না।