২১ মে ২০১৪

দিনলিপি | ১৬১২১১

‘দেশ বা দশের কথা ভেবে কিচ্ছু হবে না, নিজে বাঁচলেই বাপের নাম’ -এই একটি বাক্যই কি আমার রাষ্ট্রের আপামরের দর্শন বুঝাতে যথেষ্ট নয়? নাকি এ কথায়ও দ্বিমত জানাবেন কেউ?

২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ বা ১৬ ডিসেম্বরেও আমরা আত্মপ্রচার ছাড়া আর কিইবা করি? এসব রাষ্ট্রীয় দিবসে যে দেশপ্রেম প্রদর্শিত হয়, আদতে কি তা ধারণ করি কেউ?

রাজনীতিবিদদের সমালোচনায় মুখে ফেনা তুলে ফেলা ‘কথিত’ সুশীল বা প্রগতিশীলদের মাঝে তো দূরের কথা, আম-জনতার মাঝেও কি আমরা কোনো দেশপ্রেমিকের দেখা পাই?


© eon's photographyKuakata Guest House
নিরীহপনাকে বাঙালের দুর্বলতা ভেবে
সেই পর্তুগীজ দস্যু থেকে শুরু করে
ওই পাকি-হায়েনারা যে বীজ এই
উর্বর ভূমিতে রোপণ করে গেছে;
তার জেরে শুধু অনাস্থাই বেড়েছে।
হয়ত এ কারণেই আজও নিশ্চিন্তে
স্বাধীন পতাকা দিয়ে মুখ বেঁধেই
তোর-মোর মাকে চুদে যায় ওরা
বাণিজ্যের কনডম লাগিয়ে, আর
আমরা দেখেও দেখি না তা। তাই
জন্মের ৪০ বছর পরবর্তী তারুণ্য
নিয়েও কতটুকুই বা আশাবাদী
হতে পারে এই দেশ? একটুও কি?

০১ মে ২০১৪

দিনলিপি | ০১০৫০৯


বহুজাতিক কোম্পানীর মোড়কে মোড়ানো কনসার্টের শ্রমিক দিবসকে পাশ কাটিয়ে প্রণয় উৎসবের তাড়াহুড়োয় এক যান্ত্রিক যাত্রা ‘ফুলার রোড টু সানরাইজ’। এরপর উৎসবকেও পাশ কাটিয়ে হাইরাইজ বাতাসের আমন্ত্রণে সমর্পিত মনের অতৃপ্তি ঘোচে না বা চাহিদা মেটে না। অবশেষে মনে হয় - জাপটে ধরা শামুক স্মৃতি আর সুখ শীতল ফানুস শৈশব জীবন বা সময়ের ভুলেও আজ এক চিলতে আশ্রয়।

পরিশুস্ক পরিশোধে রূপান্তরিত
আদুরে সোহাগ লুটে নিতে গিয়ে
কখনো কি কারো মনে প্রশ্ন জাগেনি-
“প্রেম কি আদৌ পরিশোধ্য? বা ভালবাসার
পরীক্ষক আর পরিমাপক কে বা কি হতে পারে?”
বাধিত প্রেমের বাতুলতার কবলে তাই নিরবিচ্ছিন্ন অসুখ।

তবু সেই শিকারী চোখের মায়ায় সে বারে বার ফিরেছে ব্যবচ্ছেদের দেয়ালে। এক লাফে উঠে দাঁড়িয়েছে তার উপর; কেঁপে উঠেছে পাঁচ ইঞ্চি পুরু পুরো গাঁথুনি। দেয়ালের উপর বসেই দেখতে পেয়েছে মন্ট্রিলের সী-বিচ আর বেইলী রোডের দূরত্ব কতোটা কম। অথচ মাইগ্রেনের ব্যথায় কাতর শৈশবের টানে ওই দেয়াল ধরেই কাঁপতে কাঁপতে হেঁটেছিলো ফেলে আসা চন্দ্রদ্বীপের দিকে। ট্রেনের ভেঁপুরা লঞ্চের সাইরেন সেজে দাঁড়িয়েছিল কীর্তনখোলার পলিতে। অবশেষে অবসন্ন অবশিষ্টতার মঞ্চে কবি জ্বরে জ্বরাগ্রস্থ মন ভুতগ্রস্থ সংলাপ আওরে প্রলাপের মতো লিখেছিলো-
কেমনও আঁধার করেছে ব্যাকুল ক্রোধ
বিস্মিত মননে শহুরে রোদের চুম,
ভাবার আগেই ফিরেছে ভোরের বোধ
বিষাদ নয়নে ফেরারী রাতের ঘুম।
এরপর ছন্নছাড়া ক্লান্ত প্রতিশোধ
কোলাহলের ভীড়েও করেছে নিস্তব্ধ,
বিক্ষুব্ধ ক্ষুধাতেই একাকীত্ব নির্বোধ
তবুও অট্টহাসিতে কাটানো নৈঃশব্দ...

পরিণামে নির্ভেজাল পাথুরে সংলাপে
কথামালা সাজানোর অভিপ্রায়ে মত্ত
ব্যস্ততারা ক্রমাগত মগ্ন নিরুত্তাপে
আর ঘুম ঘোরে জেনেছিল সব সত্য।
এমনেই একা জন্মেছিল একাকীত্ব
অথচ বৈকালিক বোধে লীন সতীত্ব...

অবশেষে সব সীমায়িত করা ঘুম, ঘুমে গুম প্রহর আর অচেনা জনপদের মত অপ্রকাশিত আস্থা গভীর - অগভীরতার খাঁজে। তবুও দ্বান্দ্বিক দৃষ্টি-বদ্ধ সেই ঘুম ঘুমিয়ে ছিলো চিরনিদ্রা বা অন্তিম ঘুমের অপেক্ষায়।